আর সপ্তাহ খানেক পরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ বাংলা এমনকি সারা বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। আর এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান বেশ জমকালো আয়োজনেই সম্পন্ন হবে, যার তোড়জোড় ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে এই সেতু নিয়ে একটি একটি মহল ষড়যন্ত্র করে। যারা পদ্মা সেতুর অর্থায়নের পিছনের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বানচাল করে দেয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন করেন।
পদ্মা সেতু চীনের কৌশলগত পরিকল্পনা ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (সংক্ষেপে ওবর)’ বা ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই)’ আওতায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে সম্পূর্ণ অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। কোনো দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক অর্থায়ন সংস্থার কোনো বিদেশি তহবিল সেতু নির্মাণে আর্থিকভাবে অবদান রাখে নি।
বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরাম আগামী ২২ জুন ঢাকায় পদ্মা সেতু নিয়ে প্যানেল আলোচনার আয়োজন করেছে।
আলোচনার আমন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে, ‘পদ্মা সেতু: বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতার দৃষ্টান্ত’। আমন্ত্রণ পত্রে ওই অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক হিসেবে ঢাকায় চীনা দূতাবাসেরও নাম রয়েছে।
বাংলাদেশ-চীন সিল্ক রোড ফোরামের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংয়ের। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক ফি শুসা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধন করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাষ্যমতে, বিভিন্ন মহল দেখানোর চেষ্টা করছে যে পদ্মা সেতু বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ এবং বিদেশী অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্টভাবে বলেছে যে পদ্মা বহুমুখী সেতু সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে এবং অন্য কোনো দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক তহবিল থেকে কোনো বিদেশী তহবিল আর্থিকভাবে অবদান রাখেনি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশি ও বিদেশি নির্মাণ কোম্পানি জড়িত ছিল।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত করার দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে।” এর ফলে বাংলাদেশের সার্বিক সমৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে আশা করে যে, বাংলাদেশের সকল বন্ধুরা এদেশে এই যুগান্তকারী প্রকল্পের সমাপ্তির উদযাপনে অংশ নেবেন।” এর বিশেষ কারণ বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের অবদানে এই সেতুটি সম্পন্ন হয়েছে।’
প্রসংগত, তবে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছিল এটা অনেকটাই স্পষ্ট। কারণ, পদ্মা সেতুর থেকেও ছোট সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করে থাকে। কিন্তু এই বিশালাকার সেতু নির্মানে বিভিন্ন ধরনের কল্পিত দুর্নীতির বিষয়ে তুলে ধরার পর বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল করে। তবে সেটা কোনো একটি মহল করেছিল। এদিক থেকে কয়েকজনের হাত ছিল বলে মনে করে কূটনৈতিক মহল।