পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ আর সেই উপলক্ষে সেখানে জড়ো হয়েছে লাক্ষ লাক্ষ মানুষ। মানুষের ভিড়ে পদ্মার উভয় পার যেন মানুষের মহা মিলনের একটি বিশাল কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। বাংলার মানউসের স্বপ্ন আজ হয়েছে পূরণ। দীর্ঘকালের অপেক্ষার আজ হয়েছে অবসান। আজ সেই পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাবা ও মা যোগ দিতে সড়ক পথে নৌকা নিয়ে ছুটছেন।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি ছুটছেন পদ্মার দক্ষিণ তীরে শিবচরে। তার নাম মিনারুল ইসলাম। সে ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে এবং কামরাঙ্গীরচরে থাকে। মিনারুলের সঙ্গে তার স্কুলগামী মেয়ে ১৩ বছর বয়সী মিথিলা সুলতানা মিতু। সুসজ্জিত নৌকা থেকে পথে পথে চকলেট বিতরণ করছেন এসব অভিভাবকরা।
শুক্রবার বিকেলে শিমুলিয়ার ফেরি টার্মিনাল ৩-এ তাদের সঙ্গে কথা হয়। বাঙালির গর্ব ও সাহসের প্রতীক পদ্মা সেতু পন্টুন থেকে দেখা যেত। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মিথিলা বলেন, “এই সেতুটি তাদের জন্য বড়। জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা এটি নির্মাণ করে বিশ্বে আমাদের মর্যাদা বাড়িয়েছেন।” তাই উদ্বোধনের দিন সাজানো নৌকায় করে মানুষকে আনন্দ দিতে বাবার সঙ্গে উৎসবে যাচ্ছেন তিনি।
মিথিলার বাবা মিনারুল জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি নৌকাটি নির্মাণ করেছেন। তিনি দেশের ৬৪টি জেলা সফর করবেন। ছুটি নিয়ে ইতিমধ্যেই ২৫টি জেলা সফর শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্যেই তার বড় সুযোগ এসেছে। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনে তিনি সেই নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন। এবার তিনি তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন ইতিহাসের সাক্ষী হতে। সম্ভব হলে রোববার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় ফিরবেন।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু তার সরাসরি কাজে আসবে না কারণ তিনি ঢাকার বাসিন্দা। তবে এ সেতু দেশের জনগণ ও দেশের অর্থনীতির কাজে লাগবে। তা ছাড়া বিশ্বব্যাংকসহ অনেকের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সেতু নির্মাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই বাঙালি হিসেবে আমি খুশি। সেই আনন্দে পথে পথে মানুষের কাছে মিষ্টি পৌঁছে দেওয়ার কথা ভাবছিলেন তিনি। কুলানোয়া এখন টাকার জন্য চকলেট বিতরণ করছে।
এরই মধ্যে মিনারুলের নৌকায় মোটর যুক্ত হয়েছে এবং চাকা রয়েছে। সেই চাকায় চড়ে শিবচর, বাবা-মেয়ে।
প্রসঙ্গত, প্রত্যেকটি বাবার কাছে তার মেয়ে হলো রাজকন্যা। আর সেই রাজকন্যাকে নিয়ে বাবা নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। পদ্মা সেতু উপহার দওয়াতে বর্তমান সরকারের কাছে বাংলার মানুষ ঋণী হয়ে থাকবে আজীবন।