মানুষের বুদ্ধিজ্ঞান থাকা সত্ত্বেও মানুষ যে কেনো জ্ঞানবুদ্ধিহীন কাজ করে সেইটা আসলে খুবই দুঃখের একটি বিষয়। নিজ অপকর্মের জন্য যদি মানুষ শাস্তি পায় তাহলে সেখানেতো কারোরি কোনোকিছু করার থাকে না। কথায় আছে ভালো থাকতে ভুতে কিলায়, সেই প্রবাদ বাক্যটি কিহেটে গেল এই ছেলেটির বেলায়। টিকটক করতে গিয়ে খুলে ফেললো পদ্মা সেতুর স্ক্রু আর তখনি গ্রেফতার হলো যুবক।
রোববার সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সেই ফাঁকে আলোচিত ভিডিও তৈরি করেন ওই যুবক। তার নাম বায়েজিদ তালহা। পদ্মা সেতুর রেলিং খুলে টিক-ট্যাক ভিডিও আপলোড করার অভিযোগে বায়েজিদ তালহাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার সন্ধ্যায় সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর মূল সেতুতে ওঠেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দেন। পরদিন সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর দিনের বিভিন্ন সময়ে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এরই মধ্যে ভিডিওটি করেন বায়েজিদ।
34 সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যুবকটি সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বোল্ট নাট খুলে ফেলছে। হাতে একটা ঢিলা বাদাম নিয়ে বললেন, ‘এই ঢিলেঢালা শরীর, ঢিলেঢালা বাদাম, আমি ভিডিও করছি, শরীর।
‘এটা আমাদের পদ্মা সেতু…পদ্মা সেতু। আমাদের হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু দেখুন। এই বাদাম আমার হাতে। ‘
এ সময় পাশ থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ভাইরাল করবেন না।
জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার পর দিনভর পদ্মা সেতুতে গণপরিবহন ছাড়া প্রায় সব যানবাহন থামতে দেখা গেছে। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে হাঁটতে ছবি তোলেন।
মাইক্রোবাস ভাড়া করে সপরিবারে পদ্মা সেতু দেখতে আসেন তোফাজ্জল হোসেন। গাড়ি থামানোর পর, পরিবারের 14 জন সদস্য প্রায় ১৫ মিনিট ব্রিজটি ঘুরে দেখেন; গ্রুপ ফটো তুলুন।
তোফাজ্জল নিউজবাংলাকে বলেন, যেদিন সেতুর ঘোষণা দেওয়া হয়, সেদিনই আমরা সেতু পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এ জন্য আমি আমার মা, খালা, চাচাসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। সারাদিন ঘুরে কুমিল্লা ফিরে যাবো। ‘
নিয়ম ভাঙার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দেখুন আমরা কত অনিয়ম করি। এতদিন ধরে স্বপ্নের সেতুতে দাঁড়াতে চাইছি। নিজের স্বপ্ন পূরণে একটু অনিয়ম করলে দোষের কিছু নেই।’
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু হলো বাঙ্গালী জাতির অহংকার ও গর্ব। এটি বাংলার মানুষের জন্য সম্পদ আর এই সম্পদকে রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের সবার একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য। টিকটক করতে গিয়ে কোন কাজটি ভালো আর কোন কাজটি মন্দ সেই বিবেক বিসর্জন দিয়ে অবশেষে কর্মের দুঃখজনক ফল ভোগ করতে হলো এই যুবককে।