দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার জনগনের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে চলাচলের মাধ্যম হিসেবে এই রুটের ফেরিকে অবলম্ব করে পদ্মা নদী পার হয়। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিও পোহাতে হয় যাত্রীসাধারসহ সকল চালকদের। বহু প্রত্যাশিত বাংলার মানুষের দীর্ঘ স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হলে, এটি হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেতু এবং সড়ক চলাচলের জন্য প্রথম নির্দিষ্ট নদী পারাপার। দ্বি-স্তর বিশিষ্ট স্টিল ট্রাস ব্রিজটির শীর্ষে একটি চার লেনের হাইওয়ে এবং নীচে একটি সিঙ্গেল ট্র্যাক রেলপথ থাকবে এই ব্রীজে যা বাংলাদেশের এই প্রথম।
পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৩টি রুটে বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গত মঙ্গলবার (৭ জুন) বিআরটিএ পরিচালক (প্রকৌশল) শিতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুর-বরিশালের ভাড়া ৪১২ টাকা, ঢাকা-রাজৈর-গোপালগঞ্জের ভাড়া ৫০৪ টাকা, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনার ভাড়া ৬৪৯ টাকা, ঢাকা-জাজিরা-শরীয়তপুরের ভাড়া ২১৮ টাকা, ঢাকা-বরিশাল-পিরোজপুরের ভাড়া ৫৩৪ টাকা, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট-পিরোজপুরের ভাড়া ৬২৮ টাকা, ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালীর ভাড়া ৫০১ টাকা, ঢাকা-ভাঙ্গা-মাদারীপুরের ভাড়া ৩২৭ টাকা, ঢাকা-গোপালগঞ্জ-খুলনা-সাতক্ষীরার ভাড়া ৬৩৩ টাকা, ঢাকা-ভাঙ্গা-ফরিদপুরের ভাড়া ২৮৮ টাকা, ঢাকা-মাদারীপুর-বরিশাল-ভোলা-চর ফ্যাশনের ভাড়া ৬৫৩ টাকা, ঢাকা-বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু-শরীয়তপুরের ভাড়া ২১৯ টাকা এবং ঢাকা-মাদারীপুর-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটার ভাড়া ৬৯৪ টাকা হবে। ২৫ জুন উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে এসব বাস। গত মাসে পদ্মা সেতুর টোল রেট নির্ধারণের পর এ পদক্ষেপ নেয় বিআরটিএ। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করবেন। তবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য সরকার টোল ধার্য করা শুরু করলে বাস ভাড়া আবার বাড়তে পারে। বাসগুলো সায়দাবাদ ছাড়া অন্য কোনো টার্মিনাল ব্যবহার করলে তাদের নতুন রুট পারমিট নিতে হবে বলে বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বপ্নের সেতু একটি বহুমুখী সেতু, যেটি মুন্সীগঞ্জের মাওয়া স্থান এবং শরীয়তপুরের জাজিরা স্থান সাথে সংযোগকারী বাংলাদেশের একটি স্বপ্নের প্রকল্প, যা যাত্রী ও মালবাহী যানবাহনের জন্য যাতায়াতের সুবিধা ব্যাপক সুবিধা দেবে এবং ধীরে ধীরে দেশের জিডিপি আগের থেকে উন্নিত করবে। দুই স্থর বিশিষ্ট স্টিল-ট্রাস কম্পোজিট কিপিং রোডের উপরে এবং নীচে ডিজাইন করা পদ্মা সেতুটি বিশ্বের সবচেয়ে গভীর ভিত্তিতম একটি সেতু। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর নদীর ওপারে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।