উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু আর এই সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সাথে দ্বার খুলে গেল সমস্ত দেশের, যার কারণে দেশের অগ্রগতি আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এদিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন শরীয়তপুরের লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করলেও উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারেননি শরীয়তপুরের ৩ জন সংসদ সদস্য। তবে তারা কোন ক্ষোভ থেকে অংশগ্রহণ করেননি এমন নয়।
এই গৌরবময় মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী হতে শরীয়তপুরের লাখো মানুষ পৌঁছে যানন বাংলাবাজারের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ঘাটের জনসভাস্থলে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে সংক্রমিত হওয়ায় শরীয়তপুরের তিন সংসদ সদস্য জনসভায় যোগ দিতে পারেননি।
শনিবার (২৫ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে”সবু/কে তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে তারা সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তারা হলেন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক।
তারা লিখেছেন, আজ ২৫ জুন, ২০২২, বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় দিন। আমাদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুষ্ঠানকে সফল করতে আমরা গত এক মাস ধরে কাজ করে যাচ্ছি।
দুর্ভাগ্য আমাদের জন্য (তিন দফা করোনা পরীক্ষা করি) আমরা গতকাল রাতে ইভেন্টে যোগ দিতে পারিনি। কারণ আমরা তিনজনই সংক্রমিত হয়েছি। এমন একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
রোববার (২৬ জুন) সকাল ৬টা থেকে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর সড়ক পথটি সব যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
২০০১ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
প্রধান অবকাঠামো পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদী অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।
পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী সরকার সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়। সেতু কর্তৃপক্ষ ৩৫ বছরের মধ্যে ১ শতাংশ সুদে পরিশোধ করবে।
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদার।
প্রসংগত, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে মানুষের পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়ার বহুকাঙ্খিত প্রতীক্ষার দিন শেষ হলো। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনেকে উপস্থিত থাকলেও তারা পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে অপর প্রান্তে যেতে পারেননি। তবে তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন হয়তো কোনদিন পূরণ করার ইচ্ছা তাদের মনে রয়ে গেছে। খুব শীঘ্রই তারা তাদের সেই স্বপ্নটা পূরণ করবেন।