দক্ষিণ বাংলা এমনকি সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতু বাস্তবে রূপ পাবে। সেই পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নেই, সেটা এখন বাস্তব। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কারণে শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজ নির্মিত হলো পদ্মা সেতু। এই সেতুর অর্থায়ন যাতে বাতিল হয় সেজন্য বিশ্বব্যাংকের সাথে সুশীল সমাজের কয়েকজন ব্যক্তি বৈঠকের মাধ্যমে ষ’ড়য”ন্ত্র করেন। এবার উঠে আসলো ঋণ বাতিলে কিভাবে অংশগ্রহণ করেছিল সুশীল সমাজের এক ব্যক্তি।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বাতিল ও দুর্নীতি প্রমাণ করানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল সুশীল নাগরিক সমাজের কিছু সদস্য। তারা বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। যদিও ঋণ বাতিল করার জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করেন ড. ইউনূস। দুদকের তৎকালীন কমিশনার জানান, ড. ইউনূসের সাথে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল বিষয়টি সমাধানের পরামর্শ দিয়েছিল।
পদ্মা সেতু ইস্যুতে সেই সময় চারিদিকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একদিকে বিশ্বব্যাংকের তহবিল বাতিল ও দুর্নীতির অভিযোগ, অন্যদিকে সুশীল সমাজের কিছু সদস্য তা সত্য প্রমাণ করতে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বিশ্বব্যাংকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে। এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় সফর।
দলটি ঢাকায় ব্যস্ত ছিল। মন্ত্রী দুদকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তারা।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দুদকের সঙ্গে বৈঠকের আগের দিন রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে কয়েকজন সুশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিনিধিদল। জানা গেছে, বৈঠকে ড. কামাল হোসেন, মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের মতো মানুষ ছিলেন। এ সময় দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর একটি ধারণা ছিল, ওই বৈঠকে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংককে নেতিবাচক ধারণা দেওয়া হয়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সৌজন্যে দুদকের পক্ষ থেকে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। সেখানে উঠে আসেন ড. ইউনূস প্রসঙ্গ। প্রতিনিধিদলের একজন সদস্যকে পরামর্শ দিয়েছিল যে, ড. ইউনূসকে নিয়ে যেসব সমস্যা সেগুলো যেন দ্রুত সমাধান করা হয়। তাতে করে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু জানিয়েছিলেন, বিশ্বব্যাংক ইতিবাচক সাড়া দিতে পারে।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বা ঋণ চুক্তি বাতিল করানোর ক্ষেত্রে ইউনূস মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন, এমনটাই জানিয়েছেন দুদকের সাবেক ঐ কমিশনার। তার সঙ্গে যোগ দেন কয়েকজন সাধারণ মানুষ।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পর যে সকল ব্যক্তিরা ষড়য”ন্ত্র করেছিল, তাদের স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। শেষ পর্যন্ত মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু। যেটা তাদের ষড়যন্ত্রমূলক চিন্তাধারার ওপর কালিমা লেপনের একটি বড় ধরনের উদাহরণ সৃষ্টি করলো, যেটা নিয়ে তারা এখন অনেকটাই চুপ।