পদ্মা সেতু উদ্ধোধনের পরের দিন থেকেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল, যানবাহন চলাচলের প্রথম দিন সকালে পদ্মা সেতুর মাওয়া পাশের টোল প্লাজার সামনে ছিল উল্লেখ জনক যানজট। তবে তার ৪৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় তার বিপরিত চিত্র। সেতুর সামনে যানজট নেই, গাড়িও আসছে কিছুক্ষন পরপর। কখনও কখনও কিছু টোল প্লাজার কাউন্টার দীর্ঘ সময় ধরে খালি থাকে।
পদ্মা সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচলে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। মঙ্গলবার (২৮ জুন) এক চিঠিতে দক্ষিণাঞ্চলের সব মালিক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বলা হয়েছে, গত ১১ জুন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের কোনো পরিবহনের গাড়ি রুট পারমিট ছাড়া চলাচল করতে পারবে না। রুট পারমিট আছে কি না, তা নিজ জেলা মালিক সমিতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং দূরপাল্লা রুটের গাড়িগুলো শুধু জেলা শহরে স্টপেজ করতে পারবে। এর বাইরে কোনো বাস স্টপেজ করা যাবে না। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের নীতিমালার বাইরে কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না।
এই সিদ্ধান্তগুলো মেনে চলার জন্য সংশ্লিষ্টদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, রুট পারমিট ছাড়া ও অন্য রুটের গাড়ি পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। আজ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতা ও ট্রাফিক-ওয়ারী বিভাগের মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশ দেওয়া হয়। সভায় ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের গমন নির্বিঘ্ন করতে পদ্মা সেতু দিয়ে বৈধ রুট পারমিট নিয়ে যানবাহন পরিচালনা, ঢাকা-মাওয়া রুটে অন্য রুটের গাড়ি না চালানো, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করা, যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির লাইসেন্স, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিটসহ বৈধ কাগজপত্র গাড়ির সঙ্গে রাখা, যাত্রী হয়রানি বন্ধ ও ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানোর আহ্বান জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাওয়া পাশের টোল প্লাজার সামনের দৃশ্য অনেকটা অবাক করার মতো, গত দুই দিনের তুলনায় সেতুটিতে যানজট অনেক কম। রোববার ভোর সাড়ে ৫টায় যানজটের কারণে সেতু থেকে দুই কিলোমিটার দূর প্রর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। সেতু পার হতেই সময় লেগেছে অনেক। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল ৭টায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার সামনে একটি গাড়িও অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি।