আলোচিত পদ্মা বহুমূখী সেতু তৈরী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয় দেশে ও দেশের বাহিরে। তবে সব বাধা অতিক্রম করে নিজস্ব অর্থায়নে শেখ হাসিনার সাহসি ভূমিকায় পদ্মা সেতুর তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি মাসেই যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হবে। এ মাসেই পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা্। এবার পদ্মা সেতুর অর্থায়নে ষড়যন্ত্রের সাথে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্পৃক্ত থাকার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ হারিয়ে ক্ষুব্ধ নোবেল বিজয়ী মুহম্মদ ইউনূসের তদবিরের কারণেই দুর্নীতিচেষ্টার মিথ্যে অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংক সরে দাঁড়িয়েছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন থেকে প্রত্যাহার করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জনগণের অভূতপূর্ব সমর্থন ও অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ায় সকল বাধা অতিক্রম করা এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দৃঢ় সংকল্প দেখানো সম্ভব হয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ হারিয়ে ক্ষুব্ধ নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তদবিরের কারণে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ করে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রংপুরে পল্লী জনপদ এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমির (বাপার্ড) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনের প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই, আমি যখন ঘোষণা দিয়েছিলাম যে আমি আমার দেশের টাকা দিয়ে করব, আমার দেশের জনগণ, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছে, বলেছে আমার যা আছে তাই দেব, আমাদের দিয়ে করব। নিজের টাকা।অনেকে আমাকে চেকও পাঠিয়েছে।যদিও আমি ভাঙ্গিনি,তবে রেখে দিয়েছি।
এভাবে মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া, আমাকে সাহস জুগিয়েছে। এটাই আমাকে শক্তি দিয়েছে। কারণ আমি মানুষের শক্তিতে বিশ্বাস করি। অনেক বাধা অতিক্রম করে আজ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। ‘
পদ্মা সেতু নির্মাণের পথ মোটেও সহজ ছিল না বলে জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা। তার সরকারের ওপর দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগ আনা হয় বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। আমরা এখানে দুর্নীতি করতে আসিনি। আমি নিজের ভাগ্য গড়তে বসিনি। আমি দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি।’
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে বিশ্ব ব্যাংকের সরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দুষেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশেরই একজন যে আমাদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সুযোগ পেয়েছে, সব থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা যে আমার কাছ থেকে নিয়েছে তারই বেঈমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ হয়ে যায়।
কারণ একজন ব্যক্তি একটা ব্যাংকের এমডির পদ…আমাদের তো এখন প্রায় ৫২/৫৩টি ব্যাংক আছে। প্রত্যেক ব্যাংকেই তো একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টর আছেন। কতজন পারে বিদেশে টাকা বানাতে? অথবা লাখ লাখ ডলার ডোনেশন দিতে বা বিদেশ ঘুরে বেড়াতে কে পারে?’
নোবেল বিজয়ী ইউনূস কী কী সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন, সেটাও সবিস্তারে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করেছিলেন নোবেল বিজয়ী মুহম্মদ ইউনূস বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মুহম্মদ ইউনূস ষড়যন্ত্র করেই বিশ্বব্যাংককে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরিয়ে দিতে নানা রকম ভুল তথ্য প্র্রদান করেন।