পত্র-পত্রিকায় বা গণমাধ্যমে প্রায়ই প্রতারণার খবর প্রকাশিত হয়। এ অপরাধ অনাকাঙ্খিত ভাবে বেড়েছে। সমাজে বসবাসের ফলে মানুষে মানুষে বিভিন্ন সম্পর্ক তৈরি হয়, যা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে। প্রতারণা মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করে, যা পরোক্ষভাবে সমাজকে প্রভাবিত করে। জালিয়াতিকে একটি সামাজিক ভা’ইরাসও বলা যেতে পারে কারণ এটি সামাজিক বন্ধনকে ধ্বংস করে।
সম্প্রতি বগুড়ার ধুনট উপজেলায় চাঁন মিয়া নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১১ বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ ৪২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। পদ্মা সেতুতে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসব যুবকরা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বেকার যুবকের পক্ষে গোলজার রহমান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার দুপুরে ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অমিত বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চাঁন মিয়া চাকরিপ্রার্থীদের টাকা ফেরত চান। তবে টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামের চাঁন মিয়া (৬০) পদ্মা সেতুতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ছয় মাস আগে ১১ যুবকের কাছ থেকে ২ লাখ ৪২ হাজার টাকা নেন। এদের মধ্যে উপজেলার জোড়খালী গ্রামের গোলজার রহমান, শামীম হোসেন, রুস্তম আলী, তারেক, জাহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক ও শফিকুল ইসলাম প্রত্যেকে ৩০ হাজার টাকা এবং রিয়াজুল ইসলাম সবুজ, সোহেল তালুকদার, ইব্রাহিম হোসেন ও মিলন রহমান ছয় হাজার টাকা নেন।
কিন্তু চাঁন মিয়া এসব বেকার যুবকদের কাঙ্খিত চাকরি দিতে পারেননি। ফলে প্রতারিত এসব যুবক চরম হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। চাঁন মিয়াকে টাকা ফেরত দিতে চাইলে নানা ধরনের অজুহাত দেখানোর পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখায়। জোরখালী গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে গোলজার রহমান চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে ২০ মে অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য হন।
গোলজার রহমান জানান, পদ্মা সেতুর উন্নয়ন কাজের তদারকির জন্য মাসে ২৮ হাজার টাকা বেতনে আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আমাকে মাত্র ৬ হাজার টাকা বেতনে শ্রমিকের চাকরি দেন। সেখানে কয়েকদিন কাজ করে বাড়ি ফিরেছি।
একই এলাকার রিয়াজুল ইসলাম সবুজ বলেন, তিনি ১ লাখ টাকা নেন। কিন্তু আজও সে আমাকে চাকরি দিতে পারেনি।
চান মিয়া বলেন, আমি ১১ জন যুবকের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পদ্মা সেতুতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ দিয়েছি। সেখানে কয়েকদিন কাজ করার পর তারা দেশে ফিরে টাকা ফেরতের চেষ্টা করছেন। কোম্পানির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছি।
এই ঘটনায় চাঁন্দমিয়া সকলের টাকা ফের দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পরেও তার বিরুদ্ধে আইনি কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সে এখনো জেল হাজতের বাহিরে রয়েছে।