ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকারে অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন উপদেষ্টা রয়েছেন। জানা গেছে, অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া এসব শিক্ষার্থী নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী।
তবে এ অবস্থায় সরকারে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব বজায় রেখে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার মতে, সরকারের অংশ হয়ে নির্বাচন করা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ন্যায্য বলে বিবেচিত হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নুরুল আমিন বেপারী এ বিষয়ে মানবজমিনকে বলেন, “বিএনপি যে প্রশ্ন তুলেছে তা যৌক্তিক। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে থাকা ছাত্ররা নির্বাচন করতে চাইলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “বাইরের যারা আছেন, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দল গঠন করলে তা সঠিক পন্থা হবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা যদি দল গঠন করেন, তাহলে পদত্যাগ করেই তা করতে হবে। এতে তাদের নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত হবে।”
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল মন্তব্য করেছেন, “সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে না পারলে নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে।” তার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “বিএনপির নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আরেকটি ১/১১ সরকারের ইঙ্গিত বহন করে।”
ড. নুরুল আমিন বেপারী বলেন, “বাংলাদেশে কোনো সরকারই পুরোপুরি নিরপেক্ষ ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকারের যারা আছেন, তারা এনজিওর সঙ্গে জড়িত। এই এনজিওগুলো মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন ছাত্র বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন। তারা যদি পদত্যাগ করে দল গঠন করেন, তা হলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। তবে, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তাদের সমর্থন করেন, তাহলে সেটি একটি ‘কিংস পার্টি’-তে পরিণত হবে।”