শান্তিতে নোবেল পু/রস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে একটি সচেতন বক্তব্য দিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ইমরান আহমেদ ভূঁইয়া।। তার উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাপী বন্ধুহীন করার অপচেষ্টা চলছে। ইউনূসকে নিয়ে বিশ্বনেতারা বিবৃতি দেওয়ার পর দেশটির নেতাদের পাল্টা বিবৃতি দেওয়া ঠিক নয়।ড. ইউনূসের মামলা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নি/ষ্পত্তি করা সম্ভব।
বুধবার রাজধানীর লালমাটিয়ায় নিজ বাসায় দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ডিএজি এমরান আহমেদ ভূঁইয়া। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলার বিচার চলছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ জন বিশ্বনেতা এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের দাবি, ড. ইউনূসকে বিচার ব্যবস্থায় হ/য়রানি করা হচ্ছে। পরে এ বিষয়ে পাল্টা বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এ প্রসঙ্গে সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এমরান আহমেদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার মা/নহানি করা হচ্ছে এবং এটি বিচারিক হয়রানি,”।তিনি দাবি করেন, তাকে ইউনূসের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তিনি স্বাক্ষর করবেন না।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে কথা বলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এই বিষয়ে আপনার মতামত কি?
এমরান আহম্মদ: আইনমন্ত্রী প্রথিতযশা একজন আইনজীবী। আমার সম্মানিত অভিভাবক। তার বক্তব্য নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, আপনি উদ্দেশ্য নিয়ে (ড. ইউনূস সম্পর্কে) এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
এমরান আহম্মদ: যে ভাবে উদ্দেশ্য করে কথা বলেছেন আমার এমন কোনো ইচ্ছা নেই এবং ছিল না।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: ইউনূসকে নিয়ে বক্তব্যের কারণ কী?
এমরান আহম্মদ: আমরা যারা ছাত্রলীগ থেকে আওয়ামী লীগে রাজনীতি করেছি, তাদের স্কুলিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যাদের ঘিরেই আমাদের স্কুলিং হয়েছে। তাদের আদর্শে এবং তাদের রক্ষা আমাদের লক্ষ্য। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হ/ত্যার আগে দেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এখন তৈরি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। ১৯৭৪ সাল থেকে নানাভাবে বিশ্বনেতাদের কাছে হতে বঙ্গবন্ধুকে ব/ন্ধুহীন করা হয়েছিল। এ কারণে তাকে হ/ত্যার পর বিশ্বনেতাদের ভূমিকা দেখা যায়নি। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে বন্ধুহীন করার অপচেষ্টা চলছে। ড. ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী। তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। কিন্তু তাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিপক্ষ বানানো ঠিক নয়। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। প্রধানমন্ত্রী ব/লেছেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা চাইলে দেশে এসে কার্যক্রম দেখতে আসতে পারেন। তাই ইউনূসকে কেন্দ্র করে পাল্টা বক্তব্যের বিষয়টি ‘বেদরকারি’। তার বিরুদ্ধে মামলাও সফ্টলি মোকাবেলা করা যেত। তাই আমি সচেতনভাবে আমার মতামত প্রকাশ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: মিডিয়াকে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আপনার মতামত জানাতে পারতেন।
এমরান আহম্মদ: আমি এটা ভেবেছিলাম। কিন্তু এটা কতটা কঠিন তা সবাই জানে। এজন্য আমি মিডিয়াকে বেছে নিয়েছি।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: অনেকেই এখন আপনাকে আওয়ামী লীগের ‘হাইব্রিড’ বলছেন।
এমরান আহম্মদ: ১৯৯৬ সাল থেকে চার বছর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। শিবিরবিরোধী আন্দোলন করেছি। যে কেউ চাইলে অনুসন্ধান করতে পারে।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: ড. ইউনূস সম্পর্কে বিশ্বনেতাদের বক্তব্যকে আপনি কি জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক যড়যন্ত্র বলে মনে করেন?
এমরান আহম্মদ: চতুর্মুখী য/ড়যন্ত্র হচ্ছে- এটা সবাই জানে। আমি যে বিবৃতি দিয়েছিলাম এবং আমি কী হারাতে পারি তা নিয়ে আমি ভীত ছিলাম এবং এখনও ভয় পাচ্ছি। যাইহোক, আমি এটা সম্পর্কে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে। এখন অনেকেই বলছে চাচা-ভাতিজা এক হয়ে গেছে। ডঃ ইউনুস আ/মার চাচা ইত্যাদি।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: আপনি বা আপনার পরিবার সঙ্গে কি ড. ইউনূসের স/ম্পর্ক আছে?
এমরান আহম্মদ: ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। সেক্ষেত্রে আমার বাবা সহকর্মী ছিলেন। ক্যাম্পাসে তরুণ বয়স থেকেই ড. ইউনুসকে দেখেছি, তাকে চাচা বলে ডাকি। কিন্তু তার সঙ্গে পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা ছিল না।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আপনার কোনো সম্পর্ক আছে কি?
এমরান আহম্মদ: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই কথা বলছেন। অনেকের আত্মীয়স্বজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, আমাও আছে। কিন্তু আমার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য আ/বেদন করা নেই।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: বর্তমান পরিস্থিতিতে পদত্যাগ করবেন নাকি এ নিয়ে কী ভাবছেন?
এমরান আহম্মদ: পদত্যাগ করার মতো কোনো কাজ করেছি বলে মনে করি না। পদত্যাগ করব না। তবে নেত্রী (শেখ হাসিনা) যদি মনে করেন, তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমি মেনে নেব। নেত্রীর কাছে দো/য়া চাই।
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: কোনো চাপ অনুভব করছেন?
দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম: আমি মিডিয়ায় দেখেছি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে আমার নেমপ্লেট খুলে ফেলেছে কিছু উচ্ছ্বসিত সহকর্মী। অনেকে নানা কথা বলছেন। এগুলো অবশ্যই চাপ। তাদের সম্পর্কে সত্যিই কিছু করার নেই।