সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদ নির্ধারণ করা হলেও কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) মাত্র আড়াই বছর পর বিদায় নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেয় আউয়াল কমিশন। সংবাদ সম্মেলনের পর ইসি সদস্যরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলেও জানা গেছে। সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে সিইসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া, ইসির সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও সাবেক সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান।
নিয়োগের একদিন পর তারা তৎকালীন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সামনে শপথ নেন। ওই কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচন বিএনপি ও তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বয়কট করেছিল। ভোট শেষে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। বিগত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল। এর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সরকারের পতনের পর প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সময় বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিলোপ করে নতুন কমিশন গঠনেরও দাবি ওঠে। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পর আউয়াল কমিশন তাদের অবস্থান ও করণীয় জানার জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মতো ইসিকেও সংস্কার করা হবে বলে নিশ্চিত করছেন তারা। এর জন্য তারা বেশ কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সিইসিসহ অন্য কমিশনাররা অফিস করলেও তাদের বিদায়ের প্রস্তুতিই প্রাধান্য পায়। শেষ সময়ে নিজেদের প্রয়োজনীয় জরুরি কাগজপত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে নেন তারা।