নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচারনা রয়েছে নানান কৌশল। একেক জন একেক ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণা কে কেন্দ্র করে। বেশীরভাগ সময়ই দেখা যায় বিরোধী প্রার্থীর বিরুদ্ধে কথা বলে নিজের প্রচারণাকে আরো শক্ত করার চেষ্টা করে অনেকেই। সম্প্রতি নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের বিরোধী প্রার্থী সোলায়মান নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বিরোধী প্রার্থী কে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নারীর ক্ষমতা অবমাননার মত কথা বলে ফেললেন। সাথে আবার নাশতার টাকাও দিয়েছেন নারীদের যা সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়েছে নেট দুনিয়ায়।
নোয়াখালীর চাটখিলের ৪নং বদলকোট ইউনিয়নের নারীদের ‘নাশতার টাকা’ দিয়ে আনারস প্রতীকে ভোট চাইলেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) মো. সোলায়মান।
গতকাল শনিবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে দক্ষিণ বদলকোট গ্রামে নারী সমাবেশে উপস্থিত ভোটারদের টাকা দেন তিনি। এ-সংক্রান্ত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোলায়মানকে বলতে শোনা যায়, গতবার আমি নৌকা পেয়েছিলাম, কিন্তু আপনারা অনেকে আমাকে চিনতেন না, তাই ভোট দেননি। এবার আমি নৌকা চেয়েও পাইনি। তবে আমাকে আনারস মার্কায় ভোট দেবেন এবং শুধু আমার জন্যই কেন্দ্রে যাবেন। আপনারা আমাকে ভোট না দিলে আমি দেশে থাকতে পারব না।
এ সময় নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নাশতাবাবদ আপনাদের সবাইকে কিছু নগদ টাকা দেওয়া হবে। আপনারা কেন্দ্রে গিয়ে আমাকে ভোটটা দেবেন। কারণ, নৌকার প্রার্থী নারী। নারীরা এমপি হতে পারে। কিন্তু চেয়ারম্যান হলে জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। চেয়ারম্যানদের অনেক কাজ, যা নারীর দ্বারা করা সম্ভব নয়।
ওই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী পান্না আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান থাকাকালে নানা অনিয়ম করে এখন বিভিন্ন অজুহাতে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী সোলায়মান। তবে জনগণ এবার কেন্দ্রে গিয়ে সঠিক মার্কাতেই ভোট দেবেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সোলায়মান আরটিভি নিউজকে বলেন, চাটখিলে ভোটে না জিতলে আমার সমস্যা হবে। তাই নারী সমাবেশে এলাকা ছাড়ার কথা বলেছি। তবে নাশতার টাকা দেওয়ার কথা কোনো সভায় বলেছি, তা মনে নেই।
আগামী ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে চাটখিলের বদলকোট ইউনিয়নে আটজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এতে নৌকা, লাঙ্গল, হাতপাখার পাশাপাশি সোলায়মানের আনারসসহ পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
পরবর্তীতে সোলায়মান সব কথা স্বীকার করলেও নারীদের নাস্তার টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন কোন সভায় এমনটা অস্বীকার করেছেন। তবে সমস্ত নারীদেরকে নিয়ে যেভাবে তিনি কথা বলেছেন তাতে হয়তো এলাকার নারী বাসিন্দারা খুব একটা খুশি হবেন না। শুধু নাস্তার টাকায় এই ক্ষোভ হয়তো তাদের মন থেকে দূর হবে না। যদিও এ ব্যাপারে এখনও এলাকাবাসীর কোন মতামত পাওয়া যায়নি।