আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের এক চেয়ারম্যান প্রার্থী জনসম্মুক্ষে নির্বচনি প্রচারনার জন্য বক্তব্য দেন। তখন তার মুখ থেকে বেফাঁস কথা বেরিয়ে যায়। এই নিয়ে শুরু হয় তুমুল সমালোচানা।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ১৫ জুন। যারা নৌকায় ভোট দেবেন না তাদের নির্বাচনে আসতে নিষেধ করেছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।
বুধবার বিকেলে উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় সাদিকুল ইসলাম এ হু/ মকি দেন। এটি ছিল আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিমের নির্বাচনী সভা। গত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাদিকুলের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ে।
আওয়ামী লীগ নেতার নাম সাদিকুল ইসলাম। তিনি মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
তবে ভোটারদের নির্বাচনে আসতে বাধা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কেউ হয়তো এই ভিডিওটি এডিট করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ কর্মী জানান, তারা সরাসরি অনুষ্ঠানস্থলে সাদিকুলের বক্তব্য শুনেছেন। শুনে তারাও অবাক।
ফেসবুকে সাদিকুলের বক্তব্যের তিনটি পৃথক ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তি শেয়ার করেছেন। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “আমি আজ বলতে চাই যে 15 তারিখ সারাদিন ভোট হবে এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যারা দেবেন। নৌকা প্রতিযোগীতায় ভোট কেন্দ্রে আসবে।আর যারা নৌকায় ভোট দিতে অনিচ্ছুক তারা দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না।তবে আমরা পাশে থাকব।এখানে ২৪০০ ভোট আছে, দুই হাজার ভোট দিলে, আমরা দুই হাজার ভোট পেতে চাই।
আরেকটি ভিডিও ক্লিপে সাদিকুল ইসলাম বলছেন, “যেকোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এ জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের সর্বস্তরের নেতারা, আমরা প্রতিটি এলাকায় দুর্গ গড়ে তুলব। কেন্দ্র। আমাদের যা প্রয়োজন আমরা ব্যবহার করব।
সাদিকুল ইসলামের এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার প্রথম আলো</em>কে বলেন, তিনি (সাদিকুল) এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে সাধারণ ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। এসব বক্তৃতা শুনে ভোটারদের মনে ভীতি তৈরি হচ্ছে। এ বক্তব্যের জন্য নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি সমর্থিত লস্কর আলী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম। পরে দলীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।
বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী লস্কর আলী বলেন, এ ধরনের বক্তব্য দেয়ার কারণে জনমত তার (লস্কর) দিকে আসছে। তিনি বলেন, হুমকির বিষয়ে তিনি ভোটারদের কাছে অভিযোগ করেননি।
মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলী বলেন, তিনি বক্তব্যের বিষয়টি জানতে পেরেছেন। তবে এ নিয়ে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৬ জুলাই ৬০টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) উপসচিব আতিয়ার রহমান।এসব নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৬ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ জুন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৭ জুলাই এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৬ জুলাই। ইভিএমে ভোট হবে।