এ যেন ঘরের শত্রু বিভীষণ। আওয়ামী লীগের থেকেই আওয়ামী লীগের দুর্নাম তাও কিনা পাকিস্থানে পাঠানোর মত কথা। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লাতে যেখানে উপজেলার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে পাকিস্তান পাঠানোর মত কথা বলেছে। সেইসাথে আওয়ামী লীগকে রাজাকার বলেও আক্ষা দিয়েছেন। যা নিয়ে এখন গণমাধ্যমে তুমুল সমালোচনার সম্মুখীন তিনি।
কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ায় নৌকার প্রার্থীকে পাকিস্তান পাঠানোর কথা বলে ভাইরাল উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহের। গত মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা মালাপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী (চশমা) জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ওঠান বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পাকিস্তান পাঠানোর কথা বলেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহেরের এমন নেতিবাচক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওই ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে চেয়ারম্যান আবু জাহের বলেন, আমরা প্রমাণ করে দেব নৌকার মাঝি খারাপ। নৌকার মাঝি রাজাকার, নৌকা যাবে পাকিস্তান।
এছাড়াও তিনি বলেন, একজন লোক যদি ১০টা ভোট দেন তাহলে আমাদের কোনো ভোটের অভাব হবে না, একটা কথা মনে রাখবেন হারজিত চিরদিন থাকবে, অনেকে আমার নেতাকর্মীদের ভয় দেখায়, তাই আপনারা ভয় পাবেন না।
তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন ভুল করেছেন বারবার, ভুল করবেন না এবার।
এরই মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার আবু জাহেরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
গতকাল বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে বলেন, আবু জাহের আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। তিনি নৌকার প্রার্থী নিয়ে যে ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন এ বিষয়ে আমরা আইনগতভাবে কি করা যায় তা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহেরের মৃত্যুর পর ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর তার ভাই আবু জাহের আনারস প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে পরাজিত হন নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর খান চৌধুরী।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ওই ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এমন কথা, তাদের প্রার্থীকেই চিরশত্রু পাকিস্তানে পাঠাতে চাওয়া এ যেন ভাবনার বাইরে। তবে আওয়ামী লীগ থেকে বলা হয়েছে দলের থেকে খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এখন দেখার বিষয় দল থেকে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং সেখানে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা। যে বঙ্গবন্ধুর কথায় যে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ৩০ লাখ শহীদ প্রাণ দিয়ে দিল স্বাধীণতার জন্য, সেই বঙ্গবন্ধুর দলকে পাকিস্তানের রাজাকার বলা, হয়তো খুব কম শাস্তিতে ছাড়া পাবেন না তিনি।