দেশের বিভিন্ন জেলায় ধারাবাহিকভাবে চলমান রয়েছে ইউপি ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীরা এবং অন্য দলসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও অংশগ্রহন করছে। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে একের পর এক দলের নেতাকর্মীদের তরফ থেকে অভিযোগ জানানোর বিষয়টি উঠে আসছে সংবাদ মাধ্যমে। আওয়ামীলীগ নেতার নৌকাকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করা এবং সেই বিষয়ে নির্বাচনী জনসভায় বা বৈঠকে কথা বলার ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। এদিকে আ.লীগ মনোনয়ন না দেওয়া অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে।
এবার কুমিল্লার মুরাদনগরে এক সময়ের প্রভাবশালী বিএনপি কর্মী পেয়েছেন নৌকার মনোনয়ন। নাজমুল হক নাজিম নামে ওই বিএনপি কর্মী উপজেলার রামচন্দ্রপুর (উত্তর) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন।
শনিবার (১ জানুয়ারি) রাতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বোর্ড ঘোষিত তালিকায় নাজমুল হকের নাম রয়েছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষো’ভ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানায়, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এবং গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ এবং বিএনপি দলীয় সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন নাজমুল হক নাজিম ও তার পরিবারের লোকজন। তবে ক্ষমতার পালাবদলে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই বিএনপি কর্মী। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য-প্রমাণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও তদবিরের মাধ্যমে তিনি নৌকার মনোনয়ন বাগিয়ে নেন। এদিকে তৃণমূলের ত্যাগী আওয়ামী লীগ কর্মীরা মনোনয়ন না পাওয়ায় ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ এবং উত্তে’জনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর বলেন, নৌকার মনোনয়ন পাওয়া নাজমুল হক নাজিম বিএনপির একনিষ্ঠ কর্মী। নাজিম কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। সে গ্রেনেড হামলা মামলার আসা’মি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। তাকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ায় আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। অবিলম্বে তার মনোনয়ন বাতিল করে ত্যাগী কোনো কর্মীকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি করছি।
এ বিষয়ে অভিযোগ ওঠার পর নাজমুল হক নাজিম বলেছেন, আমি আমার রাজনৈতিক জীবনে কোনোদিন বিএনপির রাজনীতি করিনি এবং আগাগোড়ায় আ.লীগের রাজনীতি করে আসছি। আমি বিএনপি করি এই ধরনের যে প্রচারনা চালানো হচ্ছে সেটা একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমি নৌকার মনোনয়ন পেয়েছি আর এই কারনে একটি চক্র প্রতিহিংসার বশবতী হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার পরিবার আওয়ামী লীগ করে এবং বর্তমানেও আমার এক ভাই আওয়ামী লীগের একজন প্রবীন ও বিশিষ্ট নেতা।