সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ৬ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরপরই রীতিমতো গোটা এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। যেখানে ভিডিওতে দেখা যায়, চলমান ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘নৌকার বিপক্ষে কাউকে কোন ভোট চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না’ বলে মন্তব্য করেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম তপাদার। ইতিমধ্যে ভিডিওটি ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে ডোমসারের ভত্তাইসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ডোমসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ( নৌকা ) প্রার্থী মিজান মোহাম্মদ খানের একটি নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল হাসেম তপাদার ৬ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, ‘এই মিটিংয়ের পরে আপনারা প্রস্তুত হয়ে থাকেন, আমরা নির্বাচন জানি। নৌকার বিপক্ষে বিদ্রোহী মজিবুরের পক্ষে যে ভোট চাইবে, কাল থেকে তাদের তালিকা করে আমাকে দেবেন। আমি এই জনসভায় বলতে চাই, যে যে ভোট চাইবেন মজিবরের পক্ষে, নৌকার বিপক্ষে, তালিকা করে দেবেন। সমস্ত দায়-দায়িত্ব আমরা নেবো। এই মঞ্চের নেতৃবৃন্দ নেবেন। কোনো ভোট চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। আমার কথা পরিষ্কার।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য ও আমার মধ্যে চুল পরিমাণ বিভক্তি নাই। আমি যা বলি, তিনি তা করেন, তিনি যা বলেন, আমি তা শুনি। আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই, তিনজন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা চাই, এই ডোমসারের মাটিতে কোথাকার মজিবুর, আমি চিনি না বিদ্রোহীকে। নেতা যেখানে, কর্মীরা সেখানে। কর্মী যেখানে, ভোট সেখানে। কর্মী নাই, ভোট নাই। তোর নেতা নাই, কর্মী নাই ভোট কোথায়?
জীবন দিয়ে হলেও শেখ হাসিনার নৌকাকে বিজয়ী করার কথা উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে আমরা মিটিং করে ঘোষণা দিয়ে দেবো। ডোমসারের ৯ ওয়ার্ড, রাস্তাঘাট, যেখানেই পাওয়া যাক, নৌকার বিপক্ষে যে ভোট চাইবে, আমাকে তালিকা দেবেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবো। মিটিংয়ের পরে সিদ্ধান্ত আসবে। আমরা মঞ্চের সবাই সিদ্ধান্ত দেবো। সিদ্ধান্তের কোনো বিকল্প নাই। সিদ্ধান্তের বাইরে নেতাকর্মীরা যাবেন না। যখনই সিদ্ধান্ত দেবো, তখনই রাস্তাঘাটে এদের অবরুদ্ধ করা হবে।’
শরীয়তপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম তপাদার বলেন, আমি এসব কথা বলিনি। এডিট করে বসানো হয়েছে।
ডোমসার ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাস্টার মজিবুর রহমান খান বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। আমার কর্মীদের নির্বাচনী কার্যক্রম চালাতে দিচ্ছেন না।
চলতি নভেম্বর মাসের আগামী ১১ তারিখ সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারণা নিয়ে বেশ সময় পার করছেন নেতাকর্মীরা। তবে এ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নানা বাধা-বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।