Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নৌকার প্রার্থীতা পাওয়ার জন্য ছাড়লেন চাকরী, নির্বাচনেও পরাজিত নুরুন নবী

নৌকার প্রার্থীতা পাওয়ার জন্য ছাড়লেন চাকরী, নির্বাচনেও পরাজিত নুরুন নবী

দেশজুড়ে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের আগেই দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করবে। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের নানা ধরনের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে আসচে। অনেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটালেন নুরুন্নবী মন্ডল নামের এক ব্যক্তি। তার এখনো অবসরে যাওয়ার সময় হিসেবে ১৩ বছর বাকি রয়েছে। কিন্তু এই ১৩ বছর চাকরির মেয়াদ থাকতেই, তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে গেলেন।

তার ইচ্ছা তিনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হবেন আর এই কারনেই তিনি তার শিক্ষাকতা পেশা ছাড়লেন। তিনি ছাত্র থাকাকালীন রাজনীতির সাথে নিজেকে যুক্ত করেন এবং বর্তমান সময়ে তিনি তার শিক্ষকতার পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। এই কারণে তিনি এবার তার চাকরি ছেড়ে দিয়ে নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য অনেকটা মরিয়া হয়ে উঠেছেন। গেল নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় তাকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দল থেকে ঘোষণা করা হয়। তবে লবিংয়ের জোরে ইউনিয়নের প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও তিনবারের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমানকে টপকিয়ে পেয়েও যান নৌকা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে দুই হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছেন। এতে তিনি দুই কূলই হারিয়েছেন।

জানা যায়, নুরুন নবী মণ্ডল পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দানদীঘি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। ২০১১ সালে তিনি প্রথম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ওইবার যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। পরের ২০১৬ সালে তিনি আবারও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আসাদুর রহমানের বিপক্ষে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। তবে ওই দুইবার তিনি রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় চাকরি ছাড়তে হয়নি। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়টি সরকারি হয়। এতে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাকরি তার বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই নির্বাচন করতে তিনি এক বছর আগে চাকরি ছেড়ে দেন।

এর পর থেকে তিনি ইউনিয়নে নিয়মিত গণসংযোগ করতে থাকেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি এলাকায় সবার কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এতে দলীয় সমর্থন না পেলেও তিনি নির্বাচন করবেন বলে এলাকায় প্রচার-প্রচারণাও চলে। এমনকি তিনি নিজে নির্বাচনে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়লে নিজের দুই স্ত্রীকে দিয়ে নির্বাচন করাবেন বলে মনোনয়নপত্র দাখিল করিয়ে সমালোচিত হয়েছিলেন। এ অবস্থায় তিনি গত মাসে নৌকা পেয়ে নির্বাচনে নিশ্চিত চেয়ারম্যান হবেন এমনটা ভেবেছিলেন।

কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে তিনি তাঁর জনপ্রিয়তা হারান এবং স্বল্প সময়ের ভিতর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোয়ার খান মিঠুর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। এর ফলে নুরুন্নবী মন্ডলের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে প্রতীক পাওয়া অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনটাই মনে করেন অনেকে। গত রবিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মনারখান মিঠু ঘোড়া মার্কা প্রতীক নিয়ে ৮ হাজার ৯৯১ ভোট পাওয়ার মাধ্যমে জয়ী হন। সেখানে তার বিপরীতে নুরুন্নবী মন্ডল ৬ হাজার ৯২৭ ভোট পেলেও পরাজিত হন। এর আগে নুরুন্নবী মন্ডল তার প্রার্থীতা পাওয়ার বিষয় নিয়ে বলেছিলেন তিনি তার অবসরের আগেই চাকরি থেকে নিজেকে সরিয়ে প্রায় ১ কোটি ২১ লাখ টাকা থেকে বঞ্চিত হলেন। তা সত্ত্বেও জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।

About

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

One comment

  1. I know this web site offers quality depending articles or reviews and additional material, is there any other web
    site which presents these things in quality?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *