একজন নোবেলজয়ীকে আসামি করেছেন, এতো তাড়াতাড়ি পার পাবেন না। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে জেরার সময় এ কথা বলেন মুহাম্মদ ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটে ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে তরিকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
এদিকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে বিচারক সাংবাদিকদের বের করে দেন। ওইসময় ড. ইউনূসের আইনজীবী প্রশ্ন করেন, এটা কি ক্যা/মেরা ট্রায়াল যে সাং/বাদিকদের বের ক/রে দেয়া হলো? তিনি বলেন, সাংবাদিকরাও আ/পিল বিভাগে থাকেন। তাদের সরে যে/তে বলা হয় না। তাহলে এখানে কেন?
এ সময় বিচারক বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে বিচার শেষ ক/রতে পারবো না। পরে বিচারক সাংবাদিকদের আদালত কক্ষের পেছনে দাঁড়াতে দেন।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২২ আগস্ট ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণের পর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন সকালে সাক্ষীর বাবা মা/রা যাওয়ায় বাকি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আজ দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ জুন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ দেন আদালত।
গত ৬ জুন মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। কিন্তু এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূস হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করার পর তার বিরুদ্ধে আপিল করেন আইনজীবীরা। আপিল বিভাগে হাইকোর্টের খারিজ আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ২২ আগস্ট বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ আবার শুনানি হয়।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ এ ড. ইউনূস এবং চারজনের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এই মামলা দায়ের করেন।ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের কর্মকর্তারা ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে করতে যান। সেখানে গিয়ে তারা শ্রম আইন লঙ্ঘনের কথা জানতে পারেন। এর মধ্যে ১০১ জন শ্রমিককে স্থায়ী করার কথা থাকলেও তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।
এদিকে গত ৩০ মে ড. ইউনূসকে প্রধান আসামি করে আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদুক। মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।
দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।