গত কয়েক বছর আগেই জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজনের মায়া ত্যাগ করে সুদূর মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান নাজমুল ইসলাম। সেখানে গিয়ে একটি কম্পানিতে কাজের সুবাদে পরিচয় হয় সানজু কুমারী খাত্রী নামে এক নেপালি তরুণীর সঙ্গে। পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এরই ধারাবাহিকতায় প্রেমিকের হাত ধরে বাংলাদেশে এসে সংসার পেতেছেন ঐ তরুণী।
তার আচার-আচরণ, খাওয়া-দাওয়া, পোশাক এখন বাঙালির মতো। এমনকি তিনি সাবলীলভাবে বাংলা বলতে পারেন।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকরাজান ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের গৃহবধূ সানজু স্বামীর সংসারের জন্য ধর্ম ত্যাগ করেছেন। বিয়ের সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তার নাম রাখা হয় খাদিজা আক্তার। তার স্বামী বিদেশে থাকায় তিনি তার শ্বশুরবাড়ি এবং একমাত্র কন্যা সন্তানের সাথে সময় কাটান।
সঞ্জু বলেন, আমার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডুতে। পিতার নাম দামর বাহাদুর খত্রী। তিন বোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়।
নাজমুলের সঙ্গে প্রেম ও বিয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় একই কোম্পানিতে চাকরি করার সময় নাজমুলের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় তিন বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০১৯ সালের শেষে আমি মালয়েশিয়া থেকে আমার দেশে ফিরে আসি। পরে নাজমুলও বাংলাদেশে ফিরে আসেন। এরপর নামজুল তার এক আত্মীয়কে নিয়ে নেপালে আমার বাসায় এসে পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরিবারকে বোঝানোর পর ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি নাজমুল আমাকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। পরে স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার কর্তৃক টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কোর্ট ম্যারেজ সম্পন্ন হয়। তখন আমি ইসলাম কবুল করি। আমার নতুন নাম খাদিজা আক্তার।
নাজমুল ইসলাম বলেন, সঞ্জুকে স্ত্রী হিসেবে পেয়ে আমি খুবই খুশি। সে এখন বাঙালি। এ ছাড়া সে এখন কুরআন পড়া, পর্দা করে। বাঙালি নারীদের মতো সংসার সামলাচ্ছেন। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে আমরা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছি।
এদিকে সানজুকে ছেলের বউ হিসেবে পেয়ে রীতিমতো খুশি নাজমুলের পরিবার-স্বজনরাও। নিজেকে সে এতোটা পরিবর্তন করেছেন যে, তাকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবেন না সে নেপালির তরুণী। বর্তমানে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই দিন কাটছে তার।