বাংলাদেশের মন্ত্রীদের মধ্যে সব সময় আলোচনায় যিনি থাকেন তিনি হলেন সরকারের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি এই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেই সাথে তিনি আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদকও। সম্প্রতি তার একটি বক্তব্যে নিয়ে শুরু হয়েছে বেশ হৈচৈ। বিএনপির সমাবেশে হামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নিজেদের মধ্যে লড়াই করে সরকারের ওপর দোষ চাপাতে চায়।
“আমি আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বলছি, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশের বাইরে কেউ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। এটা করলে দায়ভার সরকারের ওপর বর্তাবে, কিন্তু আমরা তা করব না। আমাদের নেত্রী কোনো খারাপ কাজকে প্রশ্রয় দেন না’, বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের সোমবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথসভায় এসব কথা বলেন।
২৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনের কর্মসূচি সফল করতে এই যৌথ সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘একটি সুনির্দিষ্ট মহল দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। তারা দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে।’
তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা জানে না শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতো পিছু হটতে জানেন না, তিনি ভয় পান না। ওরা জানে না সে হারলে বাংলাদেশ হারবে। হারিয়ে যাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, হারিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ আর থাকবে না।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘পাকিস্তানের সময় ভালো ছিলাম’ এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির ফখরুল সাহেব বলেছেন- পাকিস্তানের সময় ভালো ছিলাম। তাদের মন বেরিয়ে গেছে। এই জাতীয়তাবাদীরা বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানাতে চায়। আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে পাকিস্তান হতে দেব না।
তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের এই শপথ, আমরা এই শপথ করছি। আবার পাকিস্তানের নাম শুনলেই আমাদের অসুস্থ হয়ে যায়। হ্যাঁ, ফখরুল সাহেব, পাকিস্তানের নাম শুনলেই আমরা পুড়ে মরে যাব। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছি। ফখরুল সাহেব, আপনি পাকিস্তান নিয়ে এত চিন্তা করেন কেন? তাহলে এটাই প্রমাণ যে, জিয়াউর রহমান একাত্তরের প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন।’
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লা ও মিরপুরে হামলা ঠিক আছে। কিন্তু বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিএনপি নিজেরাই লড়েছে। কিন্তু মিডিয়া সেটা ছাপতে চায় না। মিডিয়াও তাদের নেতিবাচক খবর ছাপতে চায় না।
কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ দুটি বিষয়ে নজর দেবে। সেগুলো হচ্ছে- তার ব্যক্তিগত সততা এবং উন্নয়ন।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দোলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এ. আবদুস সবুর, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মান্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত ,এ দিকে ওবায়দুল কাদেরের এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা আর সমালোচনা। প্রশ্ন উঠছে অনেক। এর মধ্যে নেটিজনেরা সব থেকে বেশি একটি প্রশ্নই তুলছেন। আর সেই প্রশ্নটি হলো তবে কি এত দিন নেত্রীর নির্দেশেই হামলা হয়েছে। এ নিয়ে অবশ্য আওয়ামীলীগ এর অন্য কোন নেতার কোন ধরনের মন্তব্য শোনা যায়নি।