সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে প্রায় বছর পাঁচেক আগে ছাত্রদল নেতা ইমরান খানের (৩১) সঙ্গে পরিচয় ঘটে এই তরুণীর। আর এর একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মাঝে। এভাবে দীর্ঘদিন যাওয়ার পর গত বছরের ১৫ মে কাজি অফিসে বিয়েও করেছেন তারা। তবে দাম্পত্য জীবনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো স্ত্রীর স্বীকৃতি পাননি তিনি। এমনই অভিযোগ এনে এবার ইমরানের বাড়িতে অনশনে বসেছেন ঐ তরুণী (২৭)।
অভিযুক্ত ইমরান উপজেলার রামভদ্রপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কার্তিকপুর গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে। তিনি ভেদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক।
শনিবার (৬ নভেম্বর) বেলা ১১ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে অনশন করেছেন ওই নারী। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শিপল সিকদার, ছাত্রদল নেতা ইমরানের মামা মতিন সরদারসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধানের আশ্বাস দিলে তিনি অনশন তুলে নেন। এর আগে রোববার (৩১ অক্টোবর) স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে শরীয়তপুর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই নারী।
ওই নারী বলেন, ২০১৬ সালে ফেসবুকে ছাত্রদল নেতা ইমরানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বন্ধুত্ব, এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের ১৫ মে স্থানীয় কাজি অফিসে গিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন। ওই নারী বিয়ের বিষয়টি তার পরিবারকে জানালেও ইমরান তার পরিবারকে জানাননি। বিয়ের পর ইমরানের সঙ্গে ওই নারীর গোপনে যোগাযোগ ও সম্পর্ক চলতে থাকে।
এভাবে এক বছর হয়ে গেলেও আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান করে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেওয়ায় চাপ প্রয়োগ করেন ওই নারী। ইমরান বিষয়টি নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে ওই নারীকে অস্বীকার করেন ইমরান।
ওই নারীর ভাষ্য, ‘ইসলাম ধর্মের রীতি অনুযায়ী কাজির মাধ্যমে গোপনে ইমরান আমাকে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর তার ভাইকে ইতালি পাঠাবে বলে আমার কাছ থেকে দুই ধাপে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে। তার কথায় এক বছর বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখি। আমি স্ত্রী হিসেবে তার বাড়িতে থাকতে চাওয়ার পর থেকে সে আমাকে অস্বীকার করছে। বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইমরানের এলাকার নেতাদের বিষয়টি জানালে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই স্ত্রীর মর্যাদা পেতে অনশনে বসেছেন।
এ বিষয়ে ইমরানের মামা মতিন সরদার ও ইউপি সদস্য শিপল সিকদার জানান, ইমরান আমাদের না জানিয়ে গোপনে ওই মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিষয়টি যেহেতু জানলাম উভয় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। জানতে চাইলে ইমরান খান বলেন, আমি তাকে বিয়ে করেছি ঠিক আছে। কিন্তু তার সঙ্গে আমার সংসার করা সম্ভব নয়।
এ ঘটনায় ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই তিনি এ ব্যাপারে অবগত হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো অভিযোগ পাননি তিনি। এ সময়ে তিনি আরও বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।