Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নিয়ন্ত্রন নেই, খোলাবাজারে ফের ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী

নিয়ন্ত্রন নেই, খোলাবাজারে ফের ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী

দেশের খোলা বাজারে (কার্ব মার্কেট) ডলারের দাম আবারও বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো ডলার প্রতি ১১৭ টাকা পর্যন্ত দাবি করেছে। জানা গেছে, অনেক ক্রেতা ওই দামে ডলার কিনতে চাইলেও পাননি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই খোলা বাজারে ডলারের দাম বাড়ছে। চাহিদা মেটাতে বাজারে মার্কিন মুদ্রার পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। তাই খোলা বাজারে ডলারের দাম বাড়ছে। ভবিষ্যতে আরোও বাড়তে পারে।

সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ায় গত আগস্টে দেশের খোলা বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১২০ টাকায় উঠে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর অবস্থানে দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। খুচরা বাজারে দাম নেমে আসে ১০৬-১০৮ টাকায়। এক মাস স্থিতিশীল থাকার পর গত মাসের শেষের দিকে ডলারের দাম আবার বাড়তে শুরু করে।

কার্ব মার্কেটে দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক মানি চেঞ্জারদের ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবধান ঠিক করে। নির্ধারিত হার অনুযায়ী মানি চেঞ্জাররা যে দামে ক্রয় করেন তার চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন। গতকাল মানি চেঞ্জারদের ডলার ক্রয়ের ঘোষিত দর ছিল ১০৭ টাকা। সে হিসেবে সর্বোচ্চ মূল্য ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা। যদিও এই দামে গতকাল কোনো মানি চেঞ্জারে কোনো ডলার পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি একেএম ইসমাইল হক বণিক বার্তাকে বলেন, মানি এক্সচেঞ্জে কেউ ডলার বিক্রি করতে আসছে না। প্রায় সবাই কিনতে আসছেন। এ কারণে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী ডলার দেওয়া যাচ্ছে না। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিধিনিষেধের কারণে বৈধ মানি এক্সচেঞ্জগুলো চড়া দামে ডলার কিনতে পারছে না। এ কারণে কেউ বিক্রি করতে এলে দাম শুনে ফিরে যায়। তারা সেই ডলারগুলো অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের কাছে চড়া দামে বিক্রি করছে।

ইসমাইল হক বলেন, বৈধ মানি এক্সচেঞ্জে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা হারে ডলার বিক্রি করার কথা। কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করছে কিনা আমি জানি না। অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

গত মাসে ডলারের দাম বাজার পরিস্থিতির ওপর ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেডা) আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে ডলারের দাম ঘোষণা করছে। সংগঠনটির ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল ব্যাংকিং খাতে ডলারের সর্বনিম্ন দর ছিল ১০৩ টাকা ১০ পয়সা। আর ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ১০৪ টাকা ১০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। বাফেটার ওয়েবসাইটে ঘোষিত হার অনুযায়ী, গতকাল দেশের ৫৭টি ব্যাংকের কেনা ডলারের গড় দাম ছিল ১০২ টাকা ১৪ পয়সা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা দরে ডলার কিনেছে।

চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী শফিউল্লাহ। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ডলার কিনতে মতিঝিল ও কারওয়ান বাজারের কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জে গিয়েছিলেন। কেউ 116 টাকার নিচে ডলার বিক্রি করতে রাজি হয়নি। পরে দুই ব্যাংক থেকে কিছু ডলার কিনেছেন। এ ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিনিময় হার কমেছে ১০৬ টাকা।

গত অর্থবছর থেকে দেশে ডলারের বাজারে অস্থিতিশীলতা শুরু হয়। সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ক্রমাগত ডলার বিক্রি করেছে। গত অর্থবছর শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে সাড়ে সাত বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরেও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে বেড়ে যাওয়া রিজার্ভ এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে।

About Babu

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *