ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতের পর রাশিয়া বিশ্বের অনেক দেশ দ্বারা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে। কিন্তু এবার তেল বিক্রিতে রাশিয়া ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে যাচ্ছে। এবার সেই আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে বা পাশ কাটিয়ে জ্বালানি তেল রপ্তানি করার জন্য ভিন্ন এক নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে রাশিয়া। এ কারণে দেশটি ইরানের সঙ্গে সম্ভাব্য জ্বালানি বিনিময় চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক মস্কোয় এ খবর জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার তেল ও গ্যাস ইরানের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করবে এবং তেহরান সেই তেল ও গ্যাস পারস্য উপসাগর হয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে রপ্তানি করবে।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময়, আলেকজান্ডার নোভাক সম্ভাব্য চুক্তিটিকে একটি ‘প্রতিশ্রুতিশীল প্রকল্প’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এখন প্রকল্পের সম্ভাব্য কারিগরি দিকগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাশিয়ার এই উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে চুক্তি চূড়ান্ত হলে প্রাথমিকভাবে রাশিয়া ইরানকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনমিটার প্রাকৃতিক গ্যাস এবং ৫০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে। ইরান একই পরিমাণ তেল ও গ্যাস আঞ্চলিক দেশগুলোতে হস্তান্তর করবে।
অনুরূপ চুক্তির অধীনে, ইরান বর্তমানে তুর্কমেনিস্তান থেকে তার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত দিয়ে নিজস্ব ব্যবহারের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে এবং দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্য দিয়ে আজারবাইজানে একই পরিমাণ গ্যাস রপ্তানি করে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ইউক্রেনে বিশেষ অভিযানের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার জ্বালানি খাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর, মস্কো ইরানের মাধ্যমে নিজস্ব জ্বালানি রপ্তানি নিয়ে আলোচনা শুরু করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের উত্তরাঞ্চলে তেল ও গ্যাসের ভোক্তার সংখ্যা বেশি হলেও ওই অঞ্চলে ইরানের তেল ও গ্যাসের খনি তুলনামূলকভাবে কম। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের খনি থেকে তেল ও গ্যাস সরবরাহ করা ওই অঞ্চলের মানুষের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে যায়।
তাই রাশিয়ার সাথে জ্বালানি বিনিময় চুক্তি হলে ইরান রাশিয়ার আমদানিকৃত তেল ও গ্যাসের একটি অংশ দিয়ে উত্তরাঞ্চলের জনগণের চাহিদা পূরণ করবে এবং দক্ষিণাঞ্চলের মধ্য দিয়ে রাশিয়া থেকে তার তেল ও গ্যাস রপ্তানি করবে। আগামী মাস থেকে এ প্রকল্পের প্রথম ধাপের বাস্তবায়ন শুরু হতে পারে। খবর প্রেসটিভির।
ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার সংঘাতের কারনে রাশিয়া তেল বিক্রিতে সমস্যায় পড়লেও সেটা পাশ কাটানোর চেষ্টা করছে দেশটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে রাশিয়া। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি নির্দিষ্ট বাজার বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে দেশটির অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে তার তেল বিক্রি করার রাশিয়ার ক্ষমতাকে সীমিত করেছে।