বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এর মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের প্রাণ কেড়ে নেয় ঐ বিশ্ববিদ্যালের কিছু দিকভ্রান্ত ছাত্ররা। তবে সেই ঘটনার পর ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। আবরার ফাহাদের ঘটনা যাতে আর কোনোভাবে পুনরাবৃত্তি ঘটে সেকারণে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এবার বুয়েটে শোক দিবস পালনের জন্য ছাত্রলীগের ব্যানারে নেতাকর্মীরা কর্মসূচী পালনের আয়োজন করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রলীগের ব্যানারে শনিবার শোক দিবসের কর্মসূচি আয়োজন করেন নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রলীগের সদস্যদের হাতে আবরার ফাহাদকে হ/”ত্যার পর বুয়েটে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হলেও এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার পরও রাজনৈতিক ব্যানারে কর্মসূচি আয়োজন করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
ছাত্রলীগের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করায় শনিবার রাতে বুয়েটের ক্যাফেটেরিয়ায় বিক্ষো”ভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা মিলনায়তন থেকে বের হওয়ার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া, ছাত্রলীগের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এ ধরনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আবরার হ’/”ত্যাকাণ্ডের কারণে বুয়েট ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্র রাজনীতি আবার ফিরে আসবে বলে আশ”ঙ্কা করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দোয়া মাহফিল শেষে বিদায় নেওয়ার সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের শোক দিবস উপলক্ষে আমরা এখানে দোয়া অনুষ্ঠান করতে এসেছি। এখানে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি করা হয়নি।
তবে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক ক্ষো’ভ প্রকাশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বুয়েটের উপাচার্যকে ছাত্রলীগের ব্যানারে কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ প্রসঙ্গে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হলে বলা হয়েছিল, সাবেক শিক্ষার্থীরা দোয়া অনুষ্ঠান করবেন। তখন কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি আয়োজনের কথা ছিল না।
তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা সাবেক ছাত্র এবং তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ কীভাবে দেওয়া হবে। তাদের বলব যে তারা যেন ভবিষ্যতে আমাদের না জানিয়ে এধরনের কাজ না করেন।
প্রসংগত, বুয়েটে যে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে তারপর এই ধরনের কর্মসূচী সাধারন শিক্ষার্থীরা মেনে নিতে পারছেন না। তারা চান না যে আবরার ফাহাদের মতো অন্য কারো জীবন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিথর হোক। তবে সাবেক ছাত্র নেতৃবৃন্দরা যা করছেন সেটা ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির উথ্থান ঘটানোর একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ এমনটি মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীরা।