Sunday , December 22 2024
Breaking News
Home / Entertainment / নির্মাতারা জোর করত, আপু আপনার উড়ু না দেখলে দর্শক হলে ঢুকেনা : মুনমুন

নির্মাতারা জোর করত, আপু আপনার উড়ু না দেখলে দর্শক হলে ঢুকেনা : মুনমুন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অচিনেত্রী মুনমুন। শাকিব খান, আমিন খান ও আলেকজান্ডার বো-সহ অনেক সুপার স্টার অভিনেতাদের বিপরীতে জুটি বেঁধে কাজ করে পেয়েছেন দারুন সফলতা। অভিনয় জগতে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ‘মৌমাছি’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর একটা টানা পর্দায় কাজ করে গেছেন তিনি। তবে পরবর্তীতে নানা অশ্লীলতার জন্য তার বিপক্ষে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তৎকালীন সরকার।

এজন্য ২০০৩ সালের পর তার চলচ্চিত্রে উপস্থিতি কমে যায়। মুনমুন এখন সিনেমায় অনেক টাই অনিয়মিত। ৬ বছরে ৮০ টির মতো সিনেমায় কাজ করেছেন। আর গেল ১৮ বছরে সিনেমার সংখ্যা হাতেগোনা ১০টির মতো। সর্বশেষ ২০১৯ সালে হারুন-উজ-জামান পরিচালিত ‘পদ্মারপ্রেম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

তবে অশ্লীল তকমা নিতে নারাজ এই নায়িকা। কারণ যখন যে জোয়ার আসে তাতে অনেক সময় অভিনয় শিল্পীদের কিছুই করার থাকে না। এমনটাই বিশ্বাস এই নায়িকার। সম্প্রতি কথা বলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ক্যারিয়ার নিয়ে। সেখান থেকে চুম্বক অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।

সিনেমা ছাড়ার কারণ হিসেবে মুনমুন বলেন, ‘ছাড়ার আগে সিনেমার সার্বিক অবস্থা খুব খারাপ হয়েছিল। আমার জন্য কাজ করাটা খুব কঠিন হয়ে ওঠছিল। অশ্লীলতা আর ফিল্মি পলিটিক্স অন্যতম দুটো কারণ। এতো হিট ছবি উপহার দেওয়ার পরও সবাই বলত, আমি অশ্লীল ছবির নায়িকা! মনটা বিষাদ ময় হয়ে উঠেছিল। তাই দূরে সরে যাই।’

এই বিষাদময় কথা গুলো আরও মন খুলে জানালেন মুনমুন। নামের পাশে এখনো অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করা হয়? এই প্রশ্নের জবাবে মুনমুন বলেন, ‘আমি অশ্লীলনা। তখনকার অনেক নায়িকাদের চেয়ে আমি অনেক সহনশীল পোশাক পরেছি। স্লিপলেস আমি পরতাম নাহ, নির্মাতারা আমাকে জোর করত, আপু আপনাকে হাফপ্যান্ট পড়তেই হবে। আপনার রান না দেখলে দর্শক হলে ঢুকেনা। আমি শখ করে হাফপ্যান্ট পরতাম নাহ। তখনকার সময় এমন কোন নায়িকা নাই যে হাফপ্যান্ট পরে নাই। সবাই পরেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ আমার বেশির ভাগ সময় দেখানো হয়েছে রান (উড়ু)। এখন এটা যদি বলেন আমার ছবিতে অশ্লীলতা হচ্ছে তাহলে আমার কিছু করার নাই। সিনেমা তো আর আমি বানাইনি কিংবা প্রযোজকও নই। আমি অভিনয় করেছি মাত্র। টাকা পাব, কাজ করব, চলে আসব। এইতো আমার কাজ। তখনকার সময়ে অশ্লীলতা বেশি হয়েছে মান্না ভাইয়ের ছবিতে। আমি বলছিনা মান্না ভাই অশ্লীলতা করেছেন। তার ছবিতে অশ্লীলতা ঢোকানো হয়েছে। আমার অশ্লীল ছবি নেই সেটা আমি বলছিনা। আমার ছবিতেও অশ্লীলতা আছে কিন্তু আমিতো অশ্লীলতা করিনি। ২০০৩ সালে আমি ফ্লিম ছেড়ে চলে এসেছি। এর মূল কারণ হচ্ছে অশ্লীলতা।

আমি শিল্পী সমিতিতে গিয়েছি তাদেরকে বলেছি, তারা বলেছে-‘তোমার বেশি খারাপ লাগলে তুমি ইন্ডাস্ট্রী ছেড়ে চলে যাও। যারা অশ্লীল ছবি করেছে তারা কি শিল্পী? তারা কেউ শিল্পী সমিতির সদস্যা না। বাহিরের মেয়ে এনে অশ্লীলতা করিয়েছে।

তার ক্যারিয়ারের আরও নানা দিক নিয়ে কথা বলতে বলতে তিনি জানান, ‘১৯৯৯ এ সাতটি ছবির মধ্যে আমার ‘লেডি অ্যাকশেন’ ছবি হিট। এরপর পুরো ইন্ডাস্ট্রি ঝুঁকে গেল আমার উপর। এনায়েত করিম প্রথম কাট পিস ছবি ঢোকান ছবিতে। ছবি টার নাম ঠিক মনে পড়ছেনা, মনে হয় ‘রুটি’ছিল। আপনারা খোজ নিয়ে দেখবেন। সেই ছবিতে একটা বয়স্ক মহিলা তার কাপড় খুলে দেয় এবং সেখানে অন্য একটি মেয়ের বডি জুড়ে দিয়ে একটি কাটপিস তৈরি করে। এটাই চারিদিকে ছড়িয়ে গেলো যে কাটপিস দিলেই ছবি হিট হয়। তো এভাবেই ছবি গুলতে কাট পিস ঢোকানো শুরু হলো। এভাবে আমার ছবিতে ও কাটপিস ভাইরাস এসে ঢুকল। এরপর ডিরেক্টরেরা, প্রযোজকেরা বলল মুনমুনকে নাও, কাটপিস লাগাও, মুনমুন এর ছবিতে ১০ কোটি টাকা ব্যাবসা করতে চাই।

হাফপ্যান্ট পড়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন আমাদেরকে দিয়ে এমন শর্ট ড্রেস পরানো হতো।এমন পোশাক সবাই পরেছে। তাছাড়া বাণিজ্যিক ছবি মানে যে শুধু বোরকা পরে ছবি করবে এমটাও না।বলিউডের নায়িকাদের ড্রেস আমাদের পরানো হতো, শুধু আমি কেন সবাই পরেছে, পপিও পরেছে। শুধু আমার নামেই এই অশ্লীলতার বদনাম। এটা মিথ্যা বদনাম আমার নামে। এই টাইপের ছবি মান্না ভাই করেছে কিন্তু মান্না ভাইয়ের নাম পরে না কারণ সে পরুষ মানুষ। আর আমি মেয়ে মানুষ বলে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছি। মুনমুন, ময়ূরী, ঝুমকা, পলি এই চারটা নাম পাশাপাশি লিখা হতো পত্রিকা গুলোতে অশ্লীল নায়িকা হিসাবে। একটা শিল্পী সিনেমা বানায়না, শিল্পী শুধু অভিনয়করে। একটা ফ্লিমে যদি অশ্লীলতা থাকে তাহলে এর জবাবদিহিতা ডিরেক্টর করবে। শিল্পী করবে নাহ। শিল্পীর কাজ এটা না।

এদিকে সম্প্রতি কয়েকদিন আগেও গুণী এই অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা শেয়ার করেন বাংলা চলচ্চিত্রের আরেকটি আলোচিত অভিনেত্রী নাসরিন। তাদের সঙ্গে পরিচালকদের নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরেন তিনি। এই মুহুর্তে অভিনয়ে তেমন একটা নিয়মিত নন তারা দুজনেই।

About

Check Also

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিথিলার দাম্পত্যে ভাঙনের সুর

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা এবং পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা পরিচালক সৃজিত মুখার্জির দাম্পত্য জীবনে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *