Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচন নিয়ে এবার আক্ষেপ প্রকাশ করে যা বললেন সিইসি

নির্বাচন নিয়ে এবার আক্ষেপ প্রকাশ করে যা বললেন সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর জনগণের আস্থা হারিয়েছে, নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের পদ্ধতি অনুসন্ধান করতে হবে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এসব কথা বলেন।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমার ভোট কী আমি দিতে পারবো? ভোট দিলে কী এটা ওখানেই পড়বে, না কি ফিরে এসে এক জায়গায়ই পড়বে। এ রকম নানা রকম অবন্তর..কিন্তু আমি অবন্তর বলছি না, তাদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলার কারণে এমন অবন্তর যুক্তির অবতারণা করছে। আমি বলব, নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থায় যদি আরও সংস্কার প্রবর্তন করা হয় – যেখানে দৃশ্যত আরও বেশি স্বচ্ছতা ও নির্ভরযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে। তাহলে হয়তো আগামী নির্বাচন জনগণের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য হবে।

সিইসি বলেন, কোনো নির্বাচনই বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠতে পারে না। এবারের নির্বাচন নিয়ে হয়তো আমরা খুবই সন্তুষ্ট। তারপরও বলতে হবে এই নির্বাচন বিতর্কের বাইরে যেতে পারেনি।

বিতর্কটা আছে কম-বেশি, তবে যেটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, ব্যাপক অনিয়ম ইত্যাদি হবে, যেই জিনিসটাকে উতরে নির্বাচনটাকে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি সফল, গ্রহণযোগ্য করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি আমাদের নির্বাচনে আমি আগেও বলেছি যে, বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা, রাষ্ট্র, বিভিন্ন সংগঠন আমাদের নির্বাচনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। তারাও নির্বাচন বিষয়ে বিভিন্ন গাইডলাইনস দিচ্ছিলেন এবং নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করতে হবে, এই ধরনের একটা ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন।

বিভিন্ন চাপে থেকেও নির্বাচন কমিশন ভোট সুষ্ঠু করার চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তো আমরা বিভিন্ন ত্রিমুখী চাপে আমাদের নির্বাচনটাকে সুষ্ঠু করার জন্য আরও বেশিৃসচেষ্ট হয়েছি এবং পরিশেষে যেটা আমার প্রিয় সহকর্মীরা বলেছেন যে, সকলের সহযোগিতা নিয়ে, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এত বড় কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করা সম্ভব হয় না এবং এটা সংবিধানে, আইনেও বলে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের সুবাদে জেনেছি, অনেকে সুনাম করেছেন আবার অনেকে অপবাদ দিয়েছেন। দুটোকেই আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে যেটা মনে করি, সেটি হলো নির্বাচনটা সুসম্পন্ন হয়েছে। মহাসুসম্পন্ন বলব না, সুসম্পন্ন হয়েছে। একটা চলমান সংকট, যেটা নিয়ে উৎকণ্ঠা ছিল, শঙ্কা ছিল, উদ্বেগ ছিল, সেখান থেকে জাতি উঠে এসেছে। কিন্তু এটা স্থায়ী সমাধান না। রাজনীতিতে যে সংকট-আমরা রাজনীতি করি না, কিন্তু পরেক্ষভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমাদের প্রতি রাজনীতিবিদদের যদি আস্থা না থাকে, আস্থা যদি চরম মাত্রায় চলে যায়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। কিন্তু রাজনৈতিক সংকট নিরসনের দ্বায়িত্ব আমাদের নয়। আমরা নৈতিক অবস্থান থেকে তাদেরকে অনুরোধ করতে পারি, আবেদন জানাতে পারি যে সংকট নিরসন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি রাজনীতিবিদদের আস্থা না থাকলে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নেই উল্লেখ করে সিইসি বলেন, নির্বাচন খুব একটা অংশগ্রহণমূলক হয়নি। রাজনৈতিক নেতৃত্বে নির্বাচন ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য না হলে রাজনৈতিক সংকট থেকে যায়। একটি অংশ শুধু নির্বাচন বয়কটই করেনি, প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছে। সেদিন থেকেই সংকট শুরু হয়। নির্বাচনের রাস্তা মসৃণ ছিল না। তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বাচন উঠে গেছে। সাময়িক হলেও জাতি স্বস্তি বোধ করেছিল। নির্বাচন কমিশনও স্বস্তিতে।

তিনি বলেন, এখনো পত্রিকায় সমালোচনা হচ্ছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে গুরুত্ব দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। কারণ, সেখানে অবারিতভাবে বদনাম করা হচ্ছে। মূলধারার মিডিয়ায় ভারসাম্যপূর্ণ আলোচনা হয়। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বীকৃত হয়েছে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, একটি মহল বলেছে, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার অজুহাতে ইসি সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। সরকারের সঙ্গে কোনো গোপন এজেন্ডা আছে কি না জানি না। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি এটা আমার সাথে ঘটেনি। আমি জানি না এটা অন্য কারো সাথে হয়েছে কিনা। তিনি বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা কী ছিল? অজুহাত কীভাবে দিলাম? রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি, তাই চাইলে কি ৩০ বছরের জন্য নির্বাচন পেছানো যায়? আমাদের কি এই সাংবিধানিক আদেশ আছে?

নির্বাচনের পরও রাজনৈতিক সংকট শেষ হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন সংকটে দেশ এগোতে পারে না। প্রতি পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন নিয়ে সংকট দেখা দিলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।

ইসি সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্য কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

About bisso Jit

Check Also

সংস্কারের নামে ভয়াবহ দুর্নীতি-লুটপাট

সংস্কার ও উন্নয়নের নামে কয়েকগুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে হরিলুটের ব্যবস্থা করা হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *