বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে সারা দেশে শুরু হয়ে গেছে নানা ধরনের আলোচনা আর উন্মাদনা। বিশেষ করে দেশের নির্বাচন নিয়ে পরিত্যাবরের মত এবারও বিদেশের কূটনীতিকরা বলছেন নানা ধরনের কথা। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের পরামর্শ সরকারের দরকার নেই।
একই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কাছে প্রশ্ন না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্রুনাইয়ের সুলতানের বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করা হয়। মন্ত্রী সেখানে নির্ধারিত বিষয় ছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দেন। একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকার বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে বক্তব্য দিয়েছেন তা যুক্তিযুক্ত বলে সরকার মনে করে এবং তা না মনে করলে প্রতিবাদ করবে কি?
জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনারা (মিডিয়া) উনাকে প্রশ্ন করেন বলেই বেচারা বলে। পরক্ষণেই মন্ত্রী বলেন, আপনারা যখন যাবেন তখন অবশ্যই তার দেশ সম্পর্কে জানতে চাইবেন। তিনি তাদেরকে কি প্রশ্ন করতে হবে তাও শিখিয়েছিলেন। আপনি জিজ্ঞাসা করতে পারেন কেন আমেরিকায় এত কম লোক ভোট দেয়।
তাদের মধ্যে ২৫-৩০ শতাংশের বেশি সেখানে ভোট দেয় না। বাংলাদেশে ৭৮% ভোট পড়েছে। তাদের উপনির্বাচনে দেড় থেকে দুই শতাংশ মানুষ কেন ভোট দেয়? তাদের তরুণরা রাজনীতিতে উৎসাহী নয় কেন? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছিল এবং এখন মিয়ানমারে তা বন্ধ করতে তারা কি ভূমিকা রেখেছে? এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিশ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করে জন্ম নিয়েছে। তাই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে কাউকে শেখানোর দরকার নেই। আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়ই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। ২০০১ সালে হেরে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা মসৃণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নজির স্থাপন করেন। সমাপনী প্রশ্নে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন, সরকারের উচিত তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করা। জবাবে মন্ত্রী প্রশ্নকর্তাকে তার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যথেষ্ট পরিপক্ক। সরকার মনে করে কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে তার বক্তব্য পেশ করা উচিত।
এ দিকে এবারের নির্বাচনকে ঘিরে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে সরকার। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চাপই সব থেকে বেশি। আর এই কারনে নির্বাচন নিয়ে এতো বেশি চিন্তিত নির্বাচন কমিশন থেকে সরকার দলীয় ও বিরোধী দলীয় সকলেই।