নির্বাচন নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরে শুরু হয়েছে নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনা। এই সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে যখন থেকে নির্বাচন ইভিএম এর মাধ্যমে হবার কথা শুরু হয়েছে তখন থেকে। তবে এই সমালোচনা শুধু ইভিএম নিয়ে হচ্ছে তা নয় আওয়ামী লীগ রাতের আধারে ভোট কারচুপি করে এমনটাও দাবি করছেন অনেকেই। এবার এসকল বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছেন কারা? দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ সব সময় লড়াই করেছে। যারা জনগণের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসেনি, তাদের নির্বাচন নিয়ে জনগণের প্রশ্নকে এত গুরুত্ব দেওয়ার কী আছে?
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারবে। বিএনপির চিন্তার কিছু নেই। আমি মনে করি, তারা (বিএনপি) স্বচ্ছ নির্বাচন নিয়ে চিন্তিত। কারণ, ভোট কারচুপি ও ভোটার তালিকায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। অন্যথায় চিন্তার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ কোনো সমস্যা ছাড়াই ২০০৯, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিতে পেরেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। এটি দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে সঠিক পথে নিয়ে আসে, যা সামরিক শাসন ও বিএনপি-জামায়াতের আমলে লাইনচ্যুত হয়েছিল।
নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, এটা তাদের দলের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমার মনে হয় তারা জানত যে, সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায় আসার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তারা ক্ষমতায় আসার জন্য খুন, অভ্যুত্থান ও ষড়যন্ত্রে অভ্যস্ত। এটাই বাস্তবতা. কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা হারিয়ে ফেললে কে করতে পারে?
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইভিএম একটি আধুনিক পদ্ধতি এবং বিশ্বের অনেক দেশেই এটি ব্যবহৃত হয়। আমরা দেখেছি যেখানে ইভিএম ব্যবহার করা হয় সেখানে নির্বাচনের ফলাফল দ্রুত পাওয়া যায় এবং মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারে।
দেশে প্রবাসীদের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা যাতে দেশে বিনিয়োগ করতে পারে সেজন্য বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের মধ্যে যাদের এনআইডি নেই, তারা পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারেন। ইতিমধ্যেই সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ বা সংঘাত নয়। আমি মনে করি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমি এই বার্তাটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি এবং সবাই বাংলাদেশ এবং আমাদের ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
উল্লেখ্য, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের পর এখনো দেশে ফেরেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রানীর শেষকৃত্য শেষ করে ওইখান থেকে নিউইয়র্ক এ যান তিনি। তিনি কবে দেশে ফিরছেন সে বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।