Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচন নিয়ে চরমোনাই পীরের তিন প্রস্তাব

নির্বাচন নিয়ে চরমোনাই পীরের তিন প্রস্তাব

বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তিন দফা প্রস্তাব পেশ করেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে শুরু হওয়া সংলাপে তিনি এ প্রস্তাব তুলে ধরেন। সংলাপে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন।

জাতীয় সংলাপে তিন দফা প্রস্তাব উত্থাপনকারী ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা তিনটি প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পেশ করছি।

প্রস্তাব তিনটি হলো-

১. বিতর্কিত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত একতরফা তফসিল বাতিল করে গ্রেপ্তারকৃত বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

২. বর্তমান বিতর্কিত পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। (জাতীয় সরকারের গুরুত্ব, বাস্তবতা ও রূপরেখা জাতীয়ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে)

৩. কার্যকরী সংসদ, রাজনৈতিক সংহতি এবং শতভাগ জনমতের প্রতিফলনের জন্য পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচনই অধিকতর উত্তম পদ্ধতি; যা বিশ্বে স্বীকৃতি লাভ করেছে তা প্রবর্তন করতে হবে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,আধুনিক রাষ্ট্রে সেপারেশন অব পাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বজনবিদিত একটি মৌলিক নীতি। সেপারেশন অব পাওয়ার নিশ্চিত করা হয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে। বর্তমান সরকার পরিকল্পনা করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে হত্যা করেছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের মতো মৌলিক প্রতিষ্ঠানে বারবার দলান্ধ ব্যক্তি নিয়োগ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে সরকারের অধীনস্থ করা হয়েছে। বিরোধী নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার জন্য আদালত ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বিরোধী নেতাদের ব্যাপকভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। বিরোধী নেতাদের দমনে দুদককে কমিশন করা হয়েছে। দলীয় দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে অডিটর জেনারেলের কার্যালয় ব্যবহার করা হচ্ছে। সংসদ অনেক আগেই প্রধানমন্ত্রীর গোলামে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির চেয়ারও এখন প্রধানমন্ত্রীর ভক্তিতে ভরা। জনপ্রশাসনকে পরিণত করা হয়েছে দলীয় কর্মীবাহিনীতে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী রাজনীতিতে সাবেক মুখ্য সচিবরা যেভাবে ভূমিকা রাখছেন তা স্পষ্ট।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, গণতান্ত্রিক দলীয় রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে পারস্পরিক ধ্বংসের দিকে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী শক্তিকে ধ্বংস করতে চায়। সেটা যেমন অপরাজনীতির মাধ্যমে তেমনি শারীরিকভাবেও। প্রতিবাদী সমাবেশে গুলি করা, মানুষ গুম করা তো বহুল চর্চিত সংস্কৃতি। লাখো মানুষের সমাবেশে রাতের অন্ধকারে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা, নির্বিচারে গুলি করার নজীর জাতি দেখেছে। সাম্প্রতিক দিনে দুপুরে একই ধরনের নির্মমতা দেখেছে দেশবাসী।

তিনি দলগুলোর অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে চান না বলেও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যত সম্রাজ্ঞীতে পরিণত হয়েছেন। তাকে ঘিরেই সবকিছু আবর্তিত হচ্ছে। দুদলীয় মানসিকতা দেশের রাজনীতিতেও কুফল বয়ে এনেছে। আজ বিএনপি বিপদে, তার মানে দেশে বিরোধী রাজনীতি বিলুপ্ত হতে চলেছে। বহুদলীয় রাজনীতি থাকলে এ অবস্থার উদ্ভব হয় না।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *