নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না, পশ্চিমাদের কড়া প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই অবস্থান ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখ করেছে যে ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে। হাজার হাজার মার্কিন বিরোধী দল

রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের রিপোর্ট সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের মত, নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি এবং আমরা দুঃখিত যে সব দল অংশগ্রহণ করেনি। ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সময় এবং এর আগে কয়েক মাস সহিংসতার নিন্দা করেছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার রিপোর্ট বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।

মুখপাত্র বলেন, সামনের দিকে তাকিয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে মানবাধিকার ও সুশীল সমাজকে সমর্থন করতে, আমাদের জনগণের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করতে এবং একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের আমাদের যৌথ লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নির্বাচনে গণতন্ত্রের মাপকাঠি পূরণ হয়নি – যুক্তরাজ্য: বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গণতন্ত্রের মান পূরণ হয়নি। গতকাল এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এই অবস্থান তুলে ধরে।

যুক্তরাজ্যের বিবৃতি অনুযায়ী, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে বিশ্বাসযোগ্য, উন্মুক্ত ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার ওপর। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, আইনের শাসন এবং যথাযথ প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে পূরণ হয়নি। নির্বাচনের আগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিরোধী দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে আমরা উদ্বিগ্ন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রচারণার আগে এবং চলাকালীন যে ভয়ভীতি ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে আমরা তার নিন্দা জানাই। রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের আচরণের কোনো স্থান নেই। আর সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাই বাংলাদেশিরা ভোট দেওয়ার পূর্ণ সুযোগ পাননি।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে গভীর ও ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধান এবং একটি সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য একটি সক্ষম পরিবেশ সৃষ্টি দেশকে দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম করবে। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে তাদের মতভেদকে দূরে সরিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে একটি অভিন্ন পথ খুঁজে বের করার জন্য উৎসাহিত করি। আমরা এই প্রক্রিয়ার জন্য সমর্থন বজায় রাখব।