নিবন্ধন বাতিলের কারণে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সরাসরি নির্বাচন করার উপায় নেই। আবার জোটের শরিক বিএনপির সঙ্গে একত্রে সরকার পতনের আন্দোলনে দলটি সেভাবে সক্রিয় নয়। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা রেখে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বলে তাদের সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের আগে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। উভয় গোষ্ঠীকে রক্ষা করা জামায়াত শেষ পর্যন্ত কোন গোত্রে ঝাঁপিয়ে পড়বে- প্রশ্ন উঠেছে। তবে দলটির নেতারা বলছেন, সরকারের চেয়ে আন্দোলন করেই তাদের লাভ।
সরকারের পদত্যাগ ও এক দফা সরকারের দাবিতে বিএনপির সঙ্গে আরও অনেক দল ও জোট একযোগে আন্দোলন করছে। বিএনপিকে অনুসরণ করে জামায়াতও একই কর্মসূচি ঘোষণা করে তা অনুসরণ করছে। তবে একযোগে নয়, জামায়াত আলাদাভাবে করছে। বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে উভয় পক্ষই যোগাযোগ করছে বলে দলটির সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে আগের মতো খোলামেলা নয়, কিছুটা গোপনে করা হচ্ছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হলেও সরকারের পক্ষ থেকে জামায়াতকে ভিন্নভাবে নির্বাচনে আনার চেষ্টা চলছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সরকার জামায়াতকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে বলে সূত্রের দাবি। এ বিষয়ে জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে জামায়াত।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে সরকার অন্যান্য দলের মতো জামায়াতকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু জামায়াতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম গতকাল পত্রিকাকে বলেন, আমি যতদূর জানি, তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। এই সরকারের আমলে আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাদের সঙ্গে মেলার কোনো কারণ দেখছি না।
এ অবস্থায় আন্দোলনে জামায়াতের লাভ। সেজন্য আমরা আন্দোলনে বেশি মনোযোগী।
আন্দোলনে জামায়াতের সক্রিয় অংশগ্রহণ নেই কেন জানতে চাইলে আবদুল হালিম বলেন, প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো কর্মসূচি পালন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত আমির ড
আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের আমির মুজিবুর রহমান। গতকাল রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নে সংগঠনের সর্বস্তরের জনবল, সুধীমহল ও দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং লাখ লাখ জামায়াত কর্মী তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় বহাল রাখার প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, নিবন্ধন মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। আপিলকারী হিসেবে শুনানির সুযোগ না দিয়ে মামলাটি ‘খেলাপির কারণে খারিজ’ করায় জামায়াতে ইসলামী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।