দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রথমবারের চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বেশি জয়ী হচ্ছেন এবং যেটা বেড়ে চলেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটার অন্যতম কারন হলো বিদ্রোহী প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং সেই সাথে বিএনপির অনুপস্থিতি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দলটি। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বেসামাল হয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে। এই সকল নেতারা আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ করলেও তাদেরকে মূল্য দেওয়া হচ্ছে না দলে কারন একবার তাদের দল থেকে পাশে রাখা হলে তাদের মাঝে বিরুপ মানসিকতা বিরাজ করে। তাছাড়া দলের কিছু কিছু নেতা যারা উপজেলা পর্যায় থেকে মনোনয়ন দিচ্ছে সেখানে দলীয় কোন্দল ও মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। যার প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী ফলাফলে।
প্রথম ধাপে ২১ জুন ২০৪টি ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ১৪৮ জন জয়ী হয়েছিলেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন ৪৯ জন। একইভাবে ২০ সেপ্টেম্বর ১৬০ ইউপিতে নৌকার মাঝি হয়েছেন ১১৯ জন। পক্ষান্তরে স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছিল ৩৬ জন।
কিন্তু প্রথম ধাপের তুলনায় দ্বিতীয় ধাপে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪৮৬ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছে ৩৩০ টিতে। অর্থ্যাৎ ৪০ শতাংশ ইউপিতে হারতে হয়েছে নৌকা প্রতীককে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে কেন হারতে হচ্ছে জানান এক প্রার্থী।
কুষ্টিয়া সদকীর বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মজিদ বলেন, যখন ইউনিয়ন পরিষদে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে নির্বাচন করা হবে ঠিক সেই সময় রাজনীতির বাইরে থেকে আসা নৌকার পালে চেয়ারম্যান হওয়া যাবে এমন এমন ব্যক্তিরা নৌকা পাওয়ার আশা করে এবং নৌকায় পায়। যেটা আজকে দলের জন্য একটা অমঙ্গলজনক বিষয়।
এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় দফার নির্বাচনে যারপরনাই বিব্রত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারাই দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তাদের শা’স্তি অনিবার্য।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ একটি সুশৃঙ্খল দল, একটি রাজনৈতিক দল এবং একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এই সংগঠনে শৃঙ্খলা না মানলে কারোর জায়গা নেই। আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিদ্রো’হী প্রার্থী দাঁড়িয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাকে মাপ করা হবে অথবা তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে, তার বিচার হবে না- এটা ভাবার কোন সুযোগ নেই।
বিদ্রো’হী প্রার্থীদের মদদদাতা খুজেঁ বের করার চেষ্টা হচ্ছে, বলেন বাহাউদ্দিন নাসিম।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এ বিষয়ে বলেন, কিছু প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন যারা তারা কেউ কেউ এই বিষয়টির সাথে জড়িত থাকতে পারে তবে স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিরা এ বিষয় থেকে বাদ নয়। যারা এই ধরনের কাজ করে দলকে বিতর্কিত পরিস্থিতে ফেলছে তাদের তালিকা তৈরী করে লিখিতভাবে নেত্রীকে জানাতে আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
বিদ্রোহী প্রার্থী যারা রয়েছেন তাদের সংখ্যা কমাতে চেষ্টার কমতি নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি বলেন, এই মেসেজটি যাওয়ার পর আগামীতে এটা অনেক কমে আসবে।