প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, বিদেশিদের হুমকি-ধমকি এলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) করার কিছু নেই।
সোমবার (২৫ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, আপনাদের সব সময় আহ্বান জানাব যে নির্বাচনে আসুন। আপনারা না এলে আমি নির্বাচন করব না- ইসি কখনো এ কথা বলেনি। কিন্তু যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, এটা বহুদলীয় গনতন্ত্র যদি দ্বিদলীয় বা তিন দলীয় ব্যবস্থা হতো তাহলে একটা প্রশ্ন থাকতো।
এ সময় তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় সমতা (লেবেলে প্লেয়িং ফিল্ড) বিষয়ে বলেন, আপনারা গরীবের কথা বলেছেন যারা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন না। আপনারা বড়লোক যারা, এটা একটা রিয়েলিটি। এতো বড় একটা বাস্তবতা সত্ত্বেও সেটা ইসির পক্ষে ওভারকাম করা কঠিন। আপনারা যদি বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারতেন। বিত্তের একটা শক্তি আছে, অর্থের একটা শক্তি আছে। আপনার হয়তো ২০ লাখ টাকা খরচ করার সামর্থ্য আছে, কিন্তু বাস্তবে খরচ হচ্ছে ২০ কোটি টাকা, সেটা তো আমরা চোখে দেখি না।
সিইসি বলেন, আরেকটি বিষয় অনেকেই বলেন আমি জানি না, দেশের বাইরে থেকে কোনো সমর্থন এলে আমরা কিছু বলতে পারব না। দেশের বাইরে থেকে কোনো হুমকি বা হুমকি আসুক না কেন, আপনারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন। এ ব্যাপারে ইসির কিছু করার নেই। এটা আসার কথাও নয়। আমি বিশ্বাস করি না যে অন্য কোনো দেশ আমাদের দেশকে বা আমাদের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে বা ধমক দেবে।হলেও এটা মাঠে রজনৈতিকভাবে আপনাদের মোকাবিলা করতে হবে
তিনি আরও বলেন, অনেকে বলেছেন, ইসিকে শক্তিশালী করতে চার-পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে হবে। বাস্তবায়ন হলেও আমরা তা নিতে পারব বলে মনে হয় না। সংবিধান সংশোধন হলে হয়তো নিতে পারব। অন্যথায় সম্ভব হতো না। কারণ মন্ত্রিসভার একটা ব্যাপার আছে, কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে, কীভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে, সেটা আমাদের এখতিয়ারে নেই। ইসি কোনো মন্ত্রণালয় নয়। হোম মিনিস্টার বা আরেকটা মিনিস্টার হয়ে যাব, সেটা আরেকটা সংকট হয়ে যাবে। সেটা আপনাদের বিষয়।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের আইনের বিচার করব, আমাদের যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। হয়তো আমাদের বিনীত মতামত, অতীতে সেই ক্ষমতাগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি। সেই বিধি বিধানটাই আমরা যাতে সঠিকভাবে করতে পারি, সেই নজরদারিটা আপনারা আমাদের ওপর করতে পারেন, আমাদের জবাবদিহিতা এবং পেশাদারিত্ব যেন গড়ে ওঠে।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ইভিএম মেশিনে কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা আস্থাহীনতা। আমি প্রায় ২০০টি নির্বাচন করেছি। আপনি মাঠ পর্যায়ে খোঁজখবর নেন। কারো আঙুলের ছাপ না মিললে আমরা ভিডিও কলে কথা বলে সমাধানও করি। তৃণমূল পর্যায়ে যাই ঘটুক না কেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি কি না তা দেখার বিষয়। আপনারা আমাদের ওপর আস্থা রাখুন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল, পাঁচ নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনে বিদেশী কোন চাপ এলে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করতে হবে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই বলেও তিনি জানান।