নির্বাচনকে ঘিরে নানা সময় নানান খবর পাওয়া যায়। প্রার্থীরা করছে জেতার জন্য নানান ভাবে চেষ্টা। বিভিন্ন কেন্দ্রে শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন সময় নানান ধরনের ঘটনা। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে অপ্রিতিকর পরিবেশের, কোথাও হচ্ছে ঝামেলা। কিন্তু পুলিশকে টাকা দিয়ে কেন্দ্রো দখল করার চেষ্টা করার মত ঘটনা হয়ত দেখা মিললেও সেই টাকা নকল পুলিশের হাতিয়ে নেওয়ার মত ঘটনা হয়ত এর আগে মানুষ দেখেনি। সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে গাইবান্দায়। যেখানে প্রতারিত প্রার্থী আবার নৌকা প্রতিকের।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সরকারি মোবাইল নম্বর ক্লোন করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।
প্রতারণার শিকার মুন্সি রেজওয়ানুর রহমান নামের ওই প্রার্থী মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছে প্রতারক চক্রটির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা জানাজানির পর থেকেই উপজেলাজুড়েই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রতারক চক্রটি ৬টি নাম্বারে (বিকাশ একাউন্টে) তার কাছ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। নির্বাচনে জিতিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে প্রতারক চক্রটি এই টাকা হাতিয়ে নেয় বলে জানা গেছে।
এছাড়া প্রতারক চক্রটি কোচাশহর ইউনিয়নের আবু সুফিয়ান ও শালমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছুর রহমান আনিছের কাছেও ওসির পরিচয়ে টাকা দাবি করে বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি যাচাইয়ে তাৎক্ষণিক গোবিন্দগঞ্জ থানায় তারা ফোন করলে পুরো ঘটনাটি প্রতারণা বলে নিশ্চিত হন। পরে তারা ঘটনাটি অন্য ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের অবগত করেন।
এ ঘটনায় শনিবার রাতেই প্রতারণার শিকার মুন্সি রেজওয়ানুর রহমান গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এছাড়া নাম্বার ক্লোন করে প্রতারণার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে মুন্সি রেওয়ানুর রহমান উল্লেখ করেন, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসির সরকারী মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে তার কাছে ফোন করা হয়। ফোনে ২৬ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের জেতানোর আশ্বাস দেয়া হয় এবং ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে একজনের সাথে কথা বলে টাকা দাবি করা হয়। তাদের কথামত ৬টি নম্বর থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। পরে ঘটনাটি প্রতারণা বুঝতে পেরে থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইজার উদ্দিন মুঠফোনে বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। ফোন নাম্বার ক্লোন করা প্রতারক চক্রটিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে প্রতারণার এমন ঘটনা থেকে প্রার্থীসহ সর্বসাধারণকে সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও এখনও প্রতারক চক্রটিকে ধরা যায়নি। কে বা কারা করলো সে ব্যাপারেও কিছু যানা যায়নি। এদিকে পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানিয়েছে, যদিও তদন্ত এখনও শুরু হয়নি। তবে চক্রটিকে ধরা না গেলে বলা যাচ্ছেনা আদৌ টাকাগুলো ফেরত পাবে কিনা ভুক্তভোগীরা। তবে প্রতারক যে খুবই চতুর তা বলার উপেক্ষা রাখেনা।