গতকাল (রবিবার) কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায উপজেলাধীন বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় আর এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বদিউল আলম পরাজিত হওয়ার পর অভিযোগ তুলেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শংকর কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে বিজয়ী করার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে প্রকাশ্যে অপমান এবং লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি কোনো ধরনের কারণ ব্যতিরেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গায় আটকিয়ে রেখেছেন। এ সময় তিনি বারবার তাকে গ্রেফতার করারও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। এতে নৌকার সমর্থক যারা তারা ভোট কেন্দ্র হতে চলে যেতে বাধ্য হয়।
নৌকার প্রার্থী বদিউল আলম আরও অভিযোগ করেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সম্পূর্ণরূপে একটি উদ্দেশ্য নিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। এমনকি ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাহাঙ্গীর আলমকে বিজয়ী ঘোষণা করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বাধ্য করেন।
অপরদিকে এই খবর দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তে’জনা ছড়িয়ে পড়ে। সুদূর বিএমচর থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ রবিবার দিবাগত রাত দশটা থেকে একটা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে অবস্থান করেন। তখন খোদ কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ সেখানে অবস্থান করছিলেন। এই পরিস্থিতিতে কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম উপজেলা পরিষদে গিয়ে ক্ষু’দ্ধ লোকজনকে শান্ত করেন এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাসে রাত একটার পর চলে যান। বিএমচরের এই ঘটনা নিয়ে সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বদিউল আলম। এ সময় লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে উপরোক্ত অভিযোগগুলো করেন তিনি। এ সময় দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএমচরে নৌকার প্রার্থীকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পরাজিত করাসহ তাকে মানুষের সামনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লা’ঞ্ছিত করার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দলীয় নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ সমাবেশ করেছে। চকরিয়া পৌরসভার থা’/না রোডের মাথায় কর্মসূচী থেকে অভিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপযুক্ত শা’স্তির দাবি ও নৌকার প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণার দাবি জানান।
এ বিষয়ে সৈয়দ শামসুল তাবরিজ যিনি চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি বলেন, বিএমচর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী যে অভিযোগ করেছেন সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত আরম্ভ করে দিয়েছেন। আমরা কোনো রকম গাফিলতি করছি না এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। তবে তিনি যে অভিযোগ তুলেছেন সেটা হারের পর কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে।