সম্প্রতি বিএনপি জোট ছাড়ায় জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনা চলচ্ছে। কারন নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাব পড়তে রাজনীতির মাঠে। যদিও দলটি এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনো ঘোষনা দেয়নি জোট ছাড়ার দাবি করেছে তাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এর মধ্যে নতুন করে জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নির্বাচন কমিশন। কারন তাদের নিবন্ধন ইতিমধ্যে বাতিল করেছে আদালত। জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে নতুন তথ্য দিয়ে যা জানালেন নির্বাচন কমিশনার মো: আলমগীর।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা তাদের দলের নাম পরিবর্তন করে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারেন―রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলছে, নাম পাল্টালেও দলটির নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো: আলমগীর বলেছেন, “যু/দ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালতের আদেশে বাতিল করা হয়েছে। ফলে নিবন্ধন পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তবে আদালত আদেশ দিলে ভিন্ন কথা। সেই আদেশ মানতে হবে। ‘
সোমবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য নামে হলেও জিনিস তো একই। দলের গঠনতন্ত্র যদি আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে কোনো সুযোগ নেই। আদালতের আদেশ পরিবর্তন হলে সেটা অন্য বিষয়। ‘
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর গণতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পায়। দলটির নিবন্ধন নম্বর ছিল ১৪। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা নিয়ে একটি রিট আবেদন করেন। কয়েক দফা শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্ট এক রায়ে জামায়াতের নিবন্ধনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রদান আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও আইনগত অকার্যকর ঘোষণা করেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলাম। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়কে স্থগিত না করে আপিল আবেদন গ্রহণ করায় হাইকোর্টের রায়ে ভিত্তিতেই ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। ২০২০ সালের ৫ আগস্ট জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এদিকে নিবন্ধন বাতিল হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জামায়াতে ইসলামীর প্রায় ২০ জন প্রার্থী। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও জামায়াতের প্রার্থীরা তাদের নিজস্ব প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রসঙ্গত, জামায়াত আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহন করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনার মো: আলমগীর। কারন ইতিমধ্যে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে নতুন করে পাওয়া কোনো সুযোগ নেই।