Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচনের সময় আপনারা আমাদের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবেন : ইসি আহসান হাবিব

নির্বাচনের সময় আপনারা আমাদের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবেন : ইসি আহসান হাবিব

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার উদ্দেশ্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন করছে নির্বাচন কমিশন। যার ধারাবাহিকতায় রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বৈঠক করেছেন নির্বাচন পদ্ধতিসহ নানা বিষয় নিয়ে। তবে সংলাপে বিএনপিসহ বেশ কয়েটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহন করেনি। বিএনপির থেকে পরিস্কার বলা হয়েছে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিবে তারা। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয় এটি রাজনৈতিক দলের বিষয় তাদের কিছু করার নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান যা জানালেন।

একটি গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি সংসদ নির্বাচন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক দলসহ সবাই সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আর সাংবিধানিকভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। শপথ নেওয়ার পর থেকে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া। যেকোনো মূল্যে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই।

শনিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে জেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে দেশের ৬১ জেলার ডিসি ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের আমি বিনয়ের সাথে বলতে চাই, নির্বাচনের সময় আ/পনারা আমাদের বি/শ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কা/জ করবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা আপনাদের দায়িত্ব। মনে রাখবেন আপনি প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারী। নির্বাচন কমিশন প্রত্যাশা করে সবাই নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবে। রাজনৈতিক দলের নেতাদের দ্বারা কখনও পক্ষপাতদুষ্ট বা প্রভাবিত হবেন না।

তিনি বলেন, প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের দায়িত্ব পালনে আস্থা অর্জন করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কখনই উচ্ছ্বসিত হওয়া উচিত নয় এবং তাদের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার মতো কাজ করা উচিত নয়।

আমি আরেকটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ফৌজদারি বা ফৌজদারি মামলা থাকলে তা আদালতে ভিন্নভাবে চলবে। তবে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অহেতুক হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতাকর্মীদের মধ্যে যেন কোনো আতঙ্ক না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো প্রার্থীর বাড়িতে বা ব্যবসায় হামলা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনের আগে অবৈধ অ/স্ত্র উদ্ধার ও বৈধ অস্ত্র/ জমার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে কোনো ছাড় না দিয়ে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। অতীতে নির্বাচনের আগে ও পরে সংখ্যালঘুদের ওপর স/হিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে আরও সতর্ক থাকতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। আমরা চাই না নির্বাচনের কারণে ওইসব জায়গায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক। সেজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

“নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের গু/জব বা ভুল তথ্য ছড়ায় এবং অনেক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন। যদি কোনো গু/জব বা এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হলে, আপনারা দ্রুত গুজবের সৃষ্টিকারী চিহ্নিত করবেন এবং ব্যবস্থা নেবেন। আপনি জেলা/উপজেলা পর্যায়ে সার্বিকভাবে অনুসন্ধানের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতে সতর্কতা বাড়াবেন।’ যোগ করে/ন তিনি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশনা অনুসরণ করে সংবাদ সংগ্রহে দেশব্যাপী কাজ করছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তারা নির্বাচনী এলাকা ও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের খবর সংগ্রহ করে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করে। তাদের কাজে যাতে কোনো বাধা না আসে তা নিশ্চিত করুন। গণমাধ্যমকর্মীরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন দেশের মানুষকে দেখাবেন। মনে রাখতে হবে, গণমাধ্যমকর্মীদের কাজে অযৌক্তিকভাবে বাধা দিলে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। এই বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

কমিশনার মোঃ আহসান হাবিব খান বলেন, নির্বাচনের সময় অনেক প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক/বর্তমান মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন ব্যক্তি এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। তাদের কেউ কেউ নির্বাচনের সময় পেশী, অর্থ বা ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা করে। কালো টাকার ব্যবহারের কথাও শোনা যায়। আপনারা চোখ-কান খোলা রেখেই এসব নিয়ন্ত্রণ করবেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কখনোই সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আমরা চাই প্রশাসনিক ক্যাডার এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখুক এবং পারস্পরিক অংশীদার হিসেবে কাজ করুক। নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর হবে। প্রার্থী, ভোটার, রাজনৈতিক দল, পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে সব মহলেরই আপনার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়বে।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্যান্য কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সকল এসপি-ডিসিসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, সুুষ্ঠু নির্বাচন করতে রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গুলোর নিরপেক্ষ থাকা আবশ্যক বলে মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য আইন সংস্থা নিরপেক্ষ না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

About Babu

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *