বাংলাদেশে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আবারো নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র কী পদক্ষেপ নেবে, তা আগে থেকে বলা যাবে না।
একইসঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটি।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জানুয়ারি) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ কথা বলেন।
এদিকে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চান এক সাংবাদিক। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে তার দল থেকে ডামি প্রার্থী দেওয়ার জন্য জনসমক্ষে নির্দেশনা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দেওয়া গঠনমূলক পরামর্শকে উপেক্ষা করেছেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র কি এমন ডামি নির্বাচনকে বৈধতা দেবে? তা না হলে এই ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসন কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে? গত সপ্তাহে বিবিসি তাদের এক রিপোর্টের শিরোনামে লিখেছে- ‘বাংলাদেশের নির্বাচন এক নারীর প্রদর্শনীতে পরিণত হয়েছে।’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমার মনে হয় আমি এই প্রশ্নের উত্তর আগেও দিয়েছি, কিন্তু যেহেতু নতুন বছর তাই আমি আবার উত্তর দেব। আমরা বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। বিষয়টি আমরা একাধিকবার স্পষ্ট করেছি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা খুব কাছ থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করব, তবে অবশ্যই নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ায় আমরা কী পদক্ষেপ নিতে পারি বা নিতে পারি না সে সম্পর্কে আমি আগাম কিছু বলব না।”
এরপর ওই সাংবাদিক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারাদণ্ডের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম প্রাপ্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে নববর্ষের প্রথম দিনে বাংলাদেশের শ্রম আদালত যে কারাদণ্ড দিয়েছে সে বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাচ্ছি।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ, তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার সহ অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। রায়ের পর আমরা অবশ্যই ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমালোচনা দেখেছি। আমাদের পক্ষ থেকে, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য উৎসাহিত করি এবং এই বিষয়ে পরবর্তী যেকোনও ঘটনা আমরা ঘনিষ্ঠভাবে নজরে রাখব।