এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এবারের নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ না করা বড় ইস্যু হবে না। যুক্তরাষ্ট্র ‘ডকট্রিন অফ রিয়ালিটি’-তে বিশ্বাস করে। তারা বাস্তবতা উপলব্ধি করবে।
সম্প্রতি দেশের একটি জনপ্রিয় দৈনিককে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একপর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়- নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে?
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি কিছু আশা করছি না। আমাদের সঙ্গে আমেরিকার খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমেরিকা একটি শক্তিশালী দেশ। বিশ্বের এক নম্বর দেশ। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, অস্ত্র মহড়ার দিক থেকে এক নম্বর দেশ। তাই আমরা তাদের সুপারিশকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে বিবেচনা করি।
তারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কথা বলেছেন। আমরাও দেখলাম— এটার প্রয়োগে কিছুটা বাড়াবাড়ি হয়েছে। আমরা সেটা বাতিল করে দিয়েছি। যদি কোনো উপদেশ থাকে যেটা বাস্তব নয়, সেটা আমরা গ্রহণ করতে পারব না। আমরা সবাই চাই, আমেরিকার মতো উন্নত হতে। তাদের মাথাপিছু আয় ৬৫ হাজার ডলার।
আমরাও চাই। তাদের বিরাট দেশ। তাদের লোকজন আমাদের ডবল। তাদের দেশে দাস ছিল। আমাদের দেশে কখনো দাস ছিল না। তারা দাসদের উপর অত্যা”চার করত। এক সময় তাদের দেশের একজন শ্রমিক খনিতে ১৮ ঘন্টা কাজ করে থেকে ২০ সেন্ট উপার্জন করত। সেই দিন চলে গেছে। তারা এখন ঘণ্টায় ডলার পায়। আমরা তাদের মতো হতে চাই।
আমরা আশা করি একদিন আমরা হব। একদিনে হবে না। এটা ধাপে ধাপে হতে হবে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা যখন সরকারের ক্ষমতা পান, তখন গার্মেন্টসে বেতন ছিল তিন হাজার টাকা। ক্ষমতায় আসার পর তিনি ৫৩০০ টাকা করেন।
এরপর তিনি তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখন তা সাড়ে বারো হাজার টাকা। তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। হঠাৎ করে যদি কেউ বলে যে, এটা আরও বাড়াতে হবে। আমরা এটা বাড়াতে চাই। কিন্তু এটা বেসরকারি খাত, সরকার বললেই হবে না। আমরা চাই, আমাদের পণ্যের দাম ক্রেতারা বাড়িয়ে দেবে। তা হলে আমরা এই টাকাটা শ্রমিকদের দিতে পারি। তারা বললেও পারবে না। কারণ তাদের দেশে এটাও বেসরকারি খাতের হাতে। আমাদের পোশাক কেনে দয়া করে নয়। সস্তায় পায়। গুণগত মানে ভালো জিনিস পায়। সময়মতো ডেলিভারি পায়। সে জন্য তারা কেনে।
তারা বলেছে আমরা কালকে করে দিলাম, এটা এত সহজ নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তারা আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। বৃহত্তম একক বাণিজ্য দেশ। আমাদের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছে এবং রক্ত ঝরিয়েছে। আমেরিকাও একই কথা বিশ্বাস করে।
তাদের আর আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। তবে কিছু ক্ষেত্রে স্বার্থ বাঁচাতে বিভিন্ন ব্যানারে চাপ সৃষ্টি করে থাকে। বন্ধু হিসেবে অনেক সময় আমাদের ভালো অফার করে। আমরা তাদের সেই অফার গ্রহণ করি।