দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানা কর্মকর্তাদের (ওসি) বদলির কারণ জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এই বদলির কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হবে না।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া স্বতন্ত্রসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তার জন্য ইসি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাঠ প্রশাসন ও পুলিশে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই অংশ হিসেবে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলির জন্য জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পৃথক পৃথক চিঠি দিয়েছে কমিশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব চিঠি পাঠানো হয়।
প্রথম পর্যায়ে উপজেলায় এক বছরের বেশি সময় ধরে থাকা ইউএনওদের বদলির প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে বলা হয়েছে। এছাড়া ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একই থানায় থাকা ওসিদের তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে দুটি পৃথক তালিকা ইসিকে পাঠাতে হবে। নির্বাচন কমিশন প্রস্তাব অনুমোদন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বদলির আদেশ জারি করবে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব প্রার্থীর জন্য ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরির লক্ষ্যে মূলত এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে কয়েকজন ডিসি ও এসপিকে প্রত্যাহার করতে বলেছে ইসি। তাদের বিরুদ্ধে প্রার্থী পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অধিকাংশই প্রার্থী হয়েছেন বলেও জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের একই স্থানে অবস্থান করায় তাদের অনেকের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন স্বার্থে জড়িত। এ অবস্থায় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে এ অবস্থান নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোট হবে ৭ জানুয়ারি। আর প্রচার শুরু হবে ১৮ ডিসেম্বর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, আমরা কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। দু-একদিনের মধ্যেই বিষয়টি জানতে পারবেন। তিনি এর বেশি মন্তব্য করতে রাজি হননি।