আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে কাজ করছে ইসি। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সকল ধরনের প্রচেষ্টা করছে এবং সেটা অব্যাহত রাখার কথা বলেন (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেজন্য নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী ব্যয় সংকান্ত বিষয় নিয়ে যে তথ্য দিলেন (সিইসি)কাজী হাবিবুল আউয়াল।
নির্বাচনের প্রকৃত ব্যয় নিয়ে বাস্তবতার সঙ্গে সত্যের বিরাট একটা ফারাক আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, নির্বাচনের প্রকৃত খরচ অনেক বেশি। অনেকে ১০-২০ লাখ টাকা খরচ করতে পারেন, কিন্তু প্রকৃত খরচ হয়ে যাচ্ছে ১৫-২০ কোটি টাকা। অর্থশক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রচার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তবেই প্রকৃত খরচ কমানো সম্ভব। একই মঞ্চ থেকে যদি সব দলের নির্বাচনী প্রচার চালানো হয়, এটাকে প্রজেক্টশন মিটিং বলে, বিদেশেও হয়। এ প্রস্তাবটা আমার ভালো লেগেছে। তবে আমাদের আইনে সেটা নেই।
রোববার (২৪ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ১৬ জনের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। অপরদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বৈঠকে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিইসি বলেন, আরপিও (রিপ্রেজেন্টেশন অব পিপলস অর্ডার) ছাড়াও বেশ কিছু আইন রয়েছে। ক্ষমতার কোনো ঘাটতি দেখি না। এর মানে প্রথমত সংবিধানে বলা হয়েছে নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাহী বিভাগ ইসির অধীনে থাকবে। তারপর আরপিও, নির্বাচন পরিচালনা বিধি, আচরণ বিধি রয়েছে। আরেকটি হল নির্বাচনী কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন। তাই যাদের ওপর নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তারা নির্বাচনের সময় আমাদের অধীনে থাকবেন। কেউ ডিফাইন করলে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ক্ষমতার খুব একটা অভাব আছে বলে মনে করি না। কিন্তু এটুকু সহাযোগিতা চাই, আইনানুগভাবে কিছু প্রয়োগ করলে আপনারা যেন তাতে সমর্থন দেন। সমর্থন না দিয়ে যদি বিরুদ্ধাচারণ করেন, তবে খুব কঠিন হবে।
তিনি বলেন, আমরা আরোপিত ক্ষমতা ভালোভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করব। আমাদের পদ্ধতি একটু কঠোর হতে পারে। এটা আমাদের জন্য না। শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। আপনাদের সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি। কূটনীতিকদের কথা বলেছেন, হ্যাঁ, কয়েকদিন আগে একটি দল এসেছিল। তারা নির্বাচনের ব্যাপারে পরামর্শ দেননি। তবে তারা শুধু অবহিত হয়েছেন আমাদের নির্বাচন সম্পর্কে। তারা কোনো পরামর্শ দেননি। যা শুনেছি, নির্বাচন হলেই তারা এসে দেখা-সাক্ষাৎ করে।
সিইসি বলেন, আপনি সালিশের কথা বলেছেন। সবাই বলছেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়। আমরা স্পষ্ট বলেছি, কাউকে নির্বাচনে আসতে বাধ্য করতে পারবো না। এটা আমাদের দায়িত্ব নয়। সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো আমাদের দায়িত্ব। সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির কথা বলেছেন।কোনো দিকে আমরা পক্ষপাত, কোনো দিক আমরা নিপীড়নমূলক হয়ে পড়ি। অথবা যে মাঠে যে জিনিসগুলো সহায়ক হওয়া উচিত, সে জিনিসগুলো ওভাবে আসছে না। এক্ষেত্রে সবাই যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। সবাই বলছে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে কি না, কেন্দ্রে মারামারি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা পাচ্ছে না। এজন্য আমাদের কাছে চলে আসে। কারণ, আইনে বলা আছে, নির্বাচনকালীন পুলিশ, প্রশাসন ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন ব্যয় বাস্তবতার সাথে কোন মেল নেই বলে মন্তব্য করেন (সিইসি)কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচন ব্যয় কমাতে পারলে অর্থশক্তি নিয়ন্ত্রন সম্ভব হবে বলেন জানান তিনি।