নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে দেশের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ও আওয়ামীলীগ এখনো পর্যন্ত একটি অবস্থানে পৌছাতে পারছে না। আওয়ামীলীগ সংবিধানের আলোকে নির্বাচন করতে কিন্তু বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অংশ নিতে চায় না। যদিও দীর্ঘ দিন ক্ষমতার বাহিরে আছে বিএনপি তবে আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের দাবি আদায়ের হুশিয়ারি দিচ্ছে তারা। তবে বিএনপি কথায় নিরপেক্ষ সরকার সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি নির্বাচন আসতে চায় না প্রসঙ্গে নিয়ে যা জানালেন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেছেন, বিএনপি হেরে যাওয়ার ভয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় না, আবার কখনো কখনো নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা নিয়ে অংশগ্রহণ করে।
শনিবার (৮ অক্টোবর) গণমাধ্যমে প্রকাশিত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরের মধ্যে ৩০ বছর রাষ্ট্র শাসন করেছে অসাংবিধানিক ও অনির্বাচিত স্বৈরাচারী সরকার এবং তাদের উত্তরাধিকার বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। এ কারণে ৫০ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা টেকসইভাবে গড়ে ওঠেনি বরং বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পর একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুবিহীন স্বাধীন দেশে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্থায়ী সমাধান করেছে এবং এর পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে। সংবিধানের আলোকে নির্বাচন পরিচালনা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে যে নির্বাচনী ব্যবস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে তা দেশের সংবিধান অনুযায়ী এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এই সাংবিধানিক নিয়ম মেনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে গণতন্ত্র এবং একটি স্থায়ী নির্বাচন ব্যবস্থার জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছে এবং আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচন ছাড়া কখনোই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগ সবসময় সাংবিধানিক উপায়ে এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে; যা আর কেউ করেনি। কারণ আমরা সংবিধান, গণতন্ত্র ও জাতীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সব সময়ই অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে এবং আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আশা করি। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান। আমরা চাই দেশের সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক এবং তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুক। আমরা আশা করছি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। সেই সঙ্গে জনগণের রায় মেনে নেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। ভোটের রায় অনুকূলে না হলে নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। হারের ভয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় না বিএনপি; এবং কখনও কখনও তারা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে অংশগ্রহণ করে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্য যদি এই হয় তাহলে গণতন্ত্র কখনো টেকসই হবে না; নির্বাচনী ব্যব/স্থার একটি স্থায়ী কাঠা/মো তৈরি হবে না। বরাবরের মতো এবারও তারা নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে কিছু প্রশ্ন তুলবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী চলে না। বাংলাদেশে স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ নিজেদের স্বার্থে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকে সাংবিধানিক বৈধতা দিতে বারবার সংবিধান সংশোধন করেছেন। সংবিধানের ওই সব সংশোধনীকে দেশের উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে। এখন সে জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই। যারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন তারা বাংলাদেশে একটি অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা দেখতে চান। বিএনপি নেতারা নির্বাচন ও সংবিধান নিয়ে তাদের অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন কারণ তারা এই অনির্বাচিত ও অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা দেখতে চায়। আর তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য অন্যায় কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তুলছে বিএনপি কারন তারা জানে নির্বাচন তাদের পরাজয় নিশ্চিত এ জন্য তারা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যে সব কাজ করছে বিএনপি এসব করে কোনো লাভ হবে তাদের।