Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচনকে ঘিরে যেসব বিষয়কে সমর্থন করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

নির্বাচনকে ঘিরে যেসব বিষয়কে সমর্থন করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

স্বাধীন দেশের জনগনের যেকোনো ধরণের ভালো কাজ বা কথা বলার অধিকার থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক। কথা বলার বা কাজ করার অধিকার কেড়ে নেওয়া মস্ত বড় একটি অন্যায়মূলক কাজ। কিছু স্বার্থনেশী মানুষ আছে যারা নিজেদের স্বার্থ সাধনে করতে পারেনা এমন কাজ খুব কমই আছে। দেশের মধ্যে বিভিন্ন কারণ নিয়ে চলছে অরাজকতা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ( United States ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন যুক্তরাষ্ট্র সব ধরণের যুক্তি সঙ্গত কাজকে সমর্থন করে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমাবেশের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারকে সমর্থন করে। এটি একটি সর্বজনীন মানবাধিকার। এটি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন। এ সময় উঠে আসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্য। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের কাছে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকদের নিকট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন যে প্রশ্নের তালিকা পাঠিয়েছেন সে বিষয়ে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নেড প্রাইস বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশে শরণার্থীদের সুরক্ষা জোরদার করার আহ্বান জানাই।” সেই ব্রিফিংয়ের বাংলাদেশ অংশ এখানে তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: নেড, আপনাকে ধন্যবাদ। বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রশ্ন। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করার জন্য বাংলাদেশি মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন প্রশ্নের লিস্ট দিয়েছেন। খোলা বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১,০০০০০ নাগরিক নিখোঁজ হন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকারে পরিণত হন- কারণ নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা হাজারের বেশি নাগরিককে হত্যা করেন।

তাদের বেশিরভাগই আফ্রিকান এবং আমেরিকান বংশোদ্ভূত। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আস্থা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে আরটি টিভি বন্ধ করার জন্য রুশ মিডিয়ার সমালোচনাও করেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেয় – বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এই মন্তব্য করার কয়েকদিন পর এই বিবৃতিটি এসেছে। তিনি আরও বলেন, তারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এই স্বৈরাচারী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে আপনি কী বলবেন? বাংলাদেশ সম্পর্কে আমার আরও একটি প্রশ্ন আছে।

নেড প্রাইস: ভাল কথা। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এর অংশ হিসাবে, আমরা সাধারণ স্বার্থের কিছু বিষয় উত্থাপন করার এবং একই সাথে উদ্বেগ প্রকাশ করার অবস্থানে আছি। আমরা নিয়মিত বাংলাদেশ সরকারের কাছে মানবাধিকারের বিষয়গুলো উত্থাপন করি। আমরা প্রকাশ্যে এটি করি, যেমন আমরা আগে করেছি। আবার, আমরা এটি ব্যক্তিগতভাবে করি। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানাই। আমরা আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং মৌলিক স্বাধীনতা জোরদার করার আহ্বান জানাই। আমরা শ্রম অধিকার ও নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি উদ্বাস্তুদের সুরক্ষার আহ্বান জানাই। আমরা এই অধিকারগুলোকে শক্তিশালী ও রক্ষা করতে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করছি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আমরা তাদের অন্তত ৮০০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছি। শুধুমাত্র ২০২১ সালে, USAID খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সুযোগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতির জন্য কমপক্ষে ৩০০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র ও সুশাসনের অন্তর্ভুক্ত। পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রগুলি অন্তর্ভুক্ত করে৷ ফলস্বরূপ, আমাদের বাংলাদেশী অংশীদারদের সাথে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন। সাবেক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের তহবিল আটকাতে মার্কিন প্রভাব খাটিয়েছিলেন। যাতে তাদের শাস্তি হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাকে এভাবে শাস্তি দিতে হবে। তিনি তাদের পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিতে চান। দেখুন, তিনি প্রকাশ্যে একথা বলেছেন এবং সারা দেশে প্রতিবাদ হচ্ছে। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। আপনি এই বিবৃতি সম্পর্কে কি বলেন?

Ned Price: আমরা সারা বিশ্বে যেমন করি, আমাদের অঙ্গীকার হল সমাবেশের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, যেকোনো দেশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের প্রতি। এটি একটি সর্বজনীন অধিকার। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য, যেমনটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য প্রযোজ্য। আমরা সারা বিশ্বের সরকারকে নিরাপত্তা পরিষেবা, নিরাপত্তা বাহিনী, বেসামরিক বাহিনীকে সম্মান করার আহ্বান জানাই। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের আহ্বান জানাই, যাতে তাদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।

প্রসঙ্গত, কোনো রকমের অপরাধমূলক কাজকে যুক্তরাষ্ট্র কখনই সমর্থন করেনা। যে কাজটি সঠিক ও যুক্তসঙ্গত তেমন কাজ করতে কোনো বাঁধা নেই। মানুষ যদি তাদের বাক স্বাধীনতা নাই পেয়ে থাকে তাহলে স্বাধীন দেশে বাস করে লাভ কি এমনটাই প্রশ্ন অনেকের। প্রত্যেকটি কাজে সত্যতা এবং কথায় থাকবে যুক্তি এমনটি আশা নিয়েই মানুষের সামনের দিকে পথ চলা।

About Shafique Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *