আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকে ভোটের কৌশল ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসছে। আজ সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে সুনির্দিষ্ট ১০টি এজেন্ডা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন। যার মাধ্যমে দলটিকে পুরোপুরি নির্বাচনমুখী করতে চায় ক্ষমতাসীন দলগুলো। এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সাংগঠনিক পরিস্থিতি বিশেষ করে তৃণমূলের পরিস্থিতি তুলে ধরে সাংগঠনিক প্রতিবেদন জমা দেবেন। সারা দেশের কোন সাংগঠনিক জেলায় কী সমস্যা তা উপস্থাপন করে সমাধানের নির্দেশনা চাইবেন তারা।
সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা ছাড়াও (বিভিন্ন) দলীয় প্রার্থী বাছাই এবং মনোনয়ন ফরম বিক্রির তারিখসহ বিভিন্ন বিষয়েও আলোচনা হবে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। আজকের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অবস্থান ও তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহলের তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়েও আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচনী প্রস্তুতি ছাড়াও আগামী দিনের বিভিন্ন দিনভিত্তিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে আওয়ামী লীগ।
আজকের বৈঠকের ১০টি সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা হলো: শোক প্রস্তাব, ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর মৃত্যুবার্ষিকী, ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২৪ জানুয়ারি গণ-অভ্যুত্থান দিবস পালন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও সাবকমিটি গঠন, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা, সাংগঠনিক প্রতিবেদন দাাখিল ও বিবিধ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন করা হবে। আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা করব। দলীয় মনোনয়ন ও মনোনয়ন ফরম বিক্রিসহ অন্যান্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনগণের ম্যান্ডেট ও নির্বাচনে জয়ের কৌশল নিয়েও আলোচনা হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা কোন ইস্যুতে জনগণের কাছে যাব, সে বিষয়েও কৌশল নির্ধারণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন। সামনে আমাদের বিভিন্ন দিবস আছে, সেই দিবসভিত্তিক কর্মসূচিগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিএনপি-জামায়াতের ধ্বং”সাত্মক ও না”শকতামূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান দলটির এই নেতা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচনের আগে আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসূচি নিয়েও আলোচনা হবে। মূলত জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হবে।
আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন নেত্রী (শেখ হাসিনা)।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর একই বিষয়ে বলেন, সামনে সংসদ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। জনগণও সেই উন্নয়নের পক্ষে, নির্বাচনের পক্ষে। আমরা আশা করি, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন।