Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নির্বাচনকে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হিসেবে দেখছে বিএনপি, জানা গেল কারন

নির্বাচনকে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই হিসেবে দেখছে বিএনপি, জানা গেল কারন

বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি। দীর্ঘ দিন ধরে দলটির শীর্ষ নেতৃ্ত্ব মামলার দায়ে কারাবাস ও দেশের বাহিরে রয়েছে। যার কারনে দলের নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সন্মুখিন হচ্ছে দলটি। দীর্ঘ দিন সরকারের বাহিরে থাকার কারনে নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা ধরনের হতাশা তৈরী হয়েছে অনেকে দলও ছেড়েছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বিএনপির বাঁচা-মরার লড়াই প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করা হল।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জীবন-মৃত্যুর লড়াই হিসেবে দেখছে বিএনপি। নেতারা বলছেন, দলটি দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে। আগামীতে দলটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় না এলে নেতা-কর্মীদের ধরে রাখা কঠিন হবে। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা আরও বলছেন, গতবারের মতো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনেও আমরা সমান গুরুত্ব দিচ্ছি।

সার্বিক প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি একটি নির্বাচনমুখী দল। যে কোনো পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। তবে আমরা চাই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। এখন আমাদের একটাই দাবি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। শুধু বিএনপি নয়, দেশের প্রতিটি মানুষের কাম্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা বৃহত্তর ঐক্যের উদ্যোগ নিয়েছি। সরকার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকার দাবি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

জানা গেছে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনী প্রস্তুতির দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা না থাকলেও ভেতরে ভেতরে কাজ শুরু করেছেন তারা। বিএনপি নেতারা বলছেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে তাদের। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। তারা সব দলকে একত্রিত করে অলআউটের মাঠে নামতে চায়।

দলটির নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, আগামী নির্বাচনের জন্য দলটির প্রস্তুতি দরকার। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পূরণের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবেও চলছে প্রস্তুতি। দল গোছানোর পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কাজ চলছে গোপনে। দলটির নীতিনির্ধারকরা বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে প্রতিটি আসনে দুইজন করে সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই করছেন। একটি সূত্র জানায়, প্রতিটি সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এখন থেকে দলীয় কর্মসূচিসহ বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় ইস্যুতে প্রার্থীদের নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত রোডম্যাপও তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন। সে হিসেবে নির্বাচনের আর ১৭ মাস বাকি। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার মতে, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় আন্দোলন বিএনপির জন্য ‘বাঁচা-মরার লড়াই’। ‘হয় এসপার, না হয় ওসপার’- এমন মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছে বিএনপি।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে সংবিধান সংশোধন করে নির্বাচনী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে। এরপর থেকে দলীয় সরকারের অধীনে দুটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে ভোট বয়কট করে। সে সময় হরতাল-অবরোধের মতো রাজপথে কঠোর আন্দোলনের আয়োজন করলেও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয় দলটি। তবে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে যায় বিএনপি। দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে দলটি সাতটি আসনে জয়লাভ করে। প্রথমে তারা যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত বিএনপির সাত সংসদ সদস্য সংসদে যোগ দেন।

প্রসঙ্গত, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহন না করলে বিএনপি ব্যাপক চাপের মুখে পড়বে বলে অনেকে মন্তব্য করছেন। দলটি আসন্ন নির্বাচনকে অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই হিসেবে দেখছেন বলে তাদের নেতারা বলেছেন।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *