সম্প্রতি এক গরিব দম্পতি সরকারের দেওয়া অনুদানের ঘর পায়। কারণ তার খুব গরিব পাশাপাশি থাকার কোন যায়গা নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বিক্রি করে যে তাদের আরো বিপদে পড়তে হবে তা তারা না বুঝেই ঘরটি বিক্রি করে দেয়। এই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ওই এলাকায় যায়।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় সংবাদ মাধ্যম যাওয়ার পর তারা যান্তে পারে, সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ি বিক্রি হয়েছে ৪৫ হাজার টাকায়। উপজেলার লসকারদিয়া ইউনিয়নের বাঘুটিয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জন্য জমি বরাদ্দ না দিয়ে বাড়ি নির্মাণে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। উপজেলার বাঘুটিয়া গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মোট ১০টি ঘর নির্মাণের পর ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি হস্তান্তর করা হয়। ১০ জন সুবিধাভোগীর বেশির ভাগই বাঘুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা। যেখানে ১০টি বাড়ির মধ্যে একটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রথম ঘর বরাদ্দ পান বাঘুটিয়া গ্রামের রিপন মাতুব্বর ও তার স্ত্রী বিথী বেগম। সম্প্রতি তারা বাড়িটি বিক্রি করেছে। রাশেদ মল্যা ও তার স্ত্রী রাশিদা বেগম স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বাড়িটি কিনে সেখানে বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে রাশেদ মল্যার স্ত্রী রাশিদা বেগম টাকার বিনিময়ে বাড়ি কেনার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা আগের সুবিধাভোগী রিপন মাতুব্বরের কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকায় স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বাড়িটি কিনেছি। তবে রিপন মাতুব্বর বাড়িটি বিক্রি করেছেন। এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাইনি।
উপজেলা লস্করদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান বাবুল বলেন, এ বিষয়ে এখনো কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। আমি এটা সম্পর্কে কিছুই জানি না.
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী টুলু বলেন, যাদের নামে বরাদ্দ হয়েছে তারাই ওই বাড়িতে থাকতে পারবেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব বাড়ি কোনোভাবেই বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না। সরকারি আবাসন বিক্রি করা আইনত অপরাধ। বিষয়টি জানার পর আমি সরেজমিনে গিয়ে ওই ঘরে কাউকে পাইনি। আমি নিজেই রুম তালা দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি রিপন মাতুব্বর তার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠানোর জন্য রাশেদ মোল্লার কাছ থেকে ৪৫ হাজার টাকা ধার নেন। ঋণ পরিশোধের জন্য বাড়িটি বিক্রি করে দেন। আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের অন্যান্য বাড়ির সুবিধাভোগীদেরও খুঁজছি। যারা বাড়িতে বসবাস না করে বিক্রি করছেন, তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নতুন সুবিধাভোগীদের বাড়ি দেওয়া হবে।
সরকার যদিও গরিবদের বসবাসের জন্য বাড়ি উপহার দিক তবু ওটা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি তাই যাকে ওই বাড়ি উপহার স্বরূপ দেওয়া হোক না কেন ওই বিক্রির অধিকার কারো নেই। তাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেআইনি ভাবে বিক্রির অভিযোগে রিপনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন, নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজী টুলু।