সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান খালেদা জিয়ার নাতনি জায়মা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করাসহ আরো বেশ কয়েকটি বিতর্কিত বিষয় জড়িত হয়ে বাজে কিছু মন্তব্য করে সমালোচিত হন। তাকে প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশের পর তিনি পদত্যাগ করলে আওয়ামীলীগের সকল পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর তাকে দলের আর কোনো কর্মকান্ডে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি। তবে এবার জামালপুর জেলা স্কুল মাঠে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মিছিল নিয়ে হাজির হতে দেখা গেছে জামালপুর-৪ আসনের এমপি ডা. মুরাদ হাসানকে।
পদ হারানোর পর থেকে এমপির রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায়নি। তবে সোমবার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তাকে দেখা গেছে। সম্মেলনে এলেও তাকে কোনো বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি।
জানা গেছে, সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মঞ্চে ওঠার কিছুক্ষণ আগে ড. মুরাদকে তার কয়েকজন সমর্থক নিয়ে মঞ্চের দিকে যান। তিনি মঞ্চে উঠে পেছনের সারিতে বসেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। সম্মেলন শেষে তিনি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
দলের নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে তৈরি আছেন তো? ডিসেম্বরে খেলা হবে। নির্বাচনে খেলা হবে। আন্দোলনে খেলা হবে। খেলা ১০ ডিসেম্বরেই হবে। মা”রামারি, পালটাপালটি, কোনো বাধা নয়। আমরা চাই বিএনপির সভা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক। আগুন আর লাঠি যদি নিয়ে আসে তাহলে খেলা হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা আ’গুন-লাঠি নিয়ে খেলবেন আর আমাদের নেতারা দাঁড়িয়ে ললিপপ চুষবেন- এটা হবে না। আমরাও প্রস্তুত আছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ড. ফরিদুল হক খান দুলাল এমপি, আবুল কালাম আজাদ এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন এমপি, বেগম হোসনে আরা এমপি, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন প্রমুখ।
এছাড়া সম্মেলনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেন। পরে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে ওবায়দুল কাদের জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, সহ-সভাপতি পদে ফারুক আহমেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে বিজন কুমার চন্দের নাম ঘোষণা করেন।
ড. মুরাদ হাসান সেই সময় বিদেশে গেলেও তাকে সেখান থেকে ফেরৎ পাঠানো হয়। এরপর তিনি বেশ কিছুদিন নিজেকে আড়ালে রাখেন। এরপর তিনি তার দলীয় কর্মকান্ডে নিজেকে নিষ্ক্রিয় করে রাখেন। তবে তিনি তার নিজের এলাকায় অনেকটা নিরবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।