নিবন্ধন রিট প্রত্যাখ্যানের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন মামলার রায়ের প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর উত্তরে দলটির পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম ও দক্ষিণ ডাঃ শফিকুল ইসলাম মাসউদ।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ড. ফখরুদ্দিন মানিক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সম্পাদক নাজিমুদ্দিন মোল্লা ও ড. দেলাওয়ার হোসেন ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কার্যকরী পরিষদের সদস্য আবদুল মান্নান ড. শামসুর রহমান প্রমুখ।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিন; নইলে ভিড় থেকে বাঁচার পথ পাবেন না। তিনি বলেন, অবৈধ ও মাফিয়া সরকার অন্যায় রায় দিয়ে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর সব জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী জনপ্রিয় ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অন্যায় রায় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, পুলিশ দিয়ে জনগণের বুকে গুলি করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, তবে গণবিরোধী সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জনগণের আন্দোলন চলবে।
তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলকে আগামী দিনে রাজপথের সকল কর্মসূচী জোরদার করার আহবান জানান। তিনি বলেন, সরকার আমীর জামায়াতের জন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চাচ্ছে। শফিকুর রহমান ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনসহ দলের শীর্ষ নেতাদের অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে। সরকারের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মহানগর সচিব বলেন, সময় থাকতে পদত্যাগ করুন; অন্যথায় তাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানো হবে। আর এই আদালতে আওয়ামী-বাকশালীর নিবন্ধন বাতিল হবে- ইনশাআল্লাহ।
দক্ষিণের পদযাত্রায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি মো. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অর্থবহ করে ইসলামের ভিত্তিতে ন্যায় ও সুবিচারের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। জামায়াত একটি গণতান্ত্রিক এবং সংগঠিত বৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠন। বাংলাদেশে একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে, এটি অধিকাংশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং অধিকাংশ সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে।
দেশব্যাপী স্থানীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক জনপ্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে দেশ ও জাতির সেবা করেছে। এতদিন নিজেদের দলীয় ব্যানার ও প্রতীকে নির্বাচন করতে পারলেও এই সরকার হঠাৎ করে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করল কেন? আমরা মনে করি, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এটা করেছে। তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, “প্রিয় ঢাকাবাসী, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের কারণ কি জানেন? নিবন্ধন বাতিলের মূল কারণ হলো জামায়াতে ইসলামী তার গঠনতন্ত্রে বলেছে সকল ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। এ কথা যারা মানেনা তাদের নিবন্ধন আমাদের দরকার নেই। তিনি আরও বলেন, এই অবৈধ সরকার তথাকথিত ইন্তেকাল কমিশনের মাধ্যমে জনধিকৃত ও প্রহসনের তপশিল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের জনগণ এই অবৈধ তপশিল মানে না। এই অবৈধ তফসিলের নির্বাচন জীবন দিয়ে হলেও দেশের জনগণ রুখে দেবে। এই নির্বাচন কমিশন যেদিন গঠন করা হয়েছিল সেদিনই ইন্তেকাল করেছিল। আর অবৈধ তপশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেদিন তাদের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এই জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তথাকথিত ইন্তেকাল কমিশন দিয়ে বাংলাদেশে কোনো ভোট হতে পারে না। এই সরকারের পদত্যাগ করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিতে হবে, জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দিতে হবে।