পারিবারিক কলহের জের ধরে চলতি বছরের গত ২৩ জুন পরীক্ষার নাম করে বাসা থেকে বেরিয়ে যান ইয়াশা মৃধা সুকন্যা নামে এক কলেজছাত্রী। এরপর অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও তার কোনো হদিস না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন ঐ শিক্ষার্থীর মা নাজমা ইসলাম। এমনকি মেয়ের খোঁজে সংবাদ সম্মেলনও করতে দেখা যায় তাকে।
তবে দুই মাসের মাথায় এবার সন্ধান মিলেছে ‘নিখোঁজ’ কলেজছাত্রী সুকন্যার। প্রশ্ন হলো কীভাবে তিনি নিখোঁজ হন? যদিও সুকন্যা জানিয়েছেন, তিনি নিখোঁজন হননি, নিজ ইচ্ছাতেই বাড়ি ছাড়েন।
সুকন্যা রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের ছাত্রী। মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের মুখোমুখি হন তিনি।
মাকে দোষারোপ করে সুকন্যা বলেন, আমি আমার পরিবারে ফিরতে চাই না। আমার মা আমাকে নানাভাবে নির্যাতন করে। সে আমাকে বিক্রি করতে চেয়েছিল।
এদিকে সুকন্যার মায়ের মামলায় তার বন্ধু ইসতিয়াককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুকন্যাও। তিনি বলেন, আমার বন্ধু চিশতীর কোনো দোষ নেই।
গত শনিবার সুকন্যার খোঁজে সংবাদ সম্মেলন করেন মা নাজমা ইসলাম। তিনি বলেন, আমার মেয়ে নাকি আমার সম্পর্কে দুর্নাম করেছে। তাকে নাকি আমি মারধর করেছি। কথা না শোনা, পড়াশোনাসহ নানা কারণে মা হিসেবে তো মারতেই পারি। কিন্তু ক্লাস সেভেনের পর থেকে আমি কখনো তার গায়ে হাত দেইনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লন্ডন প্রবাসী বাবা আকুতি জানিয়ে বলেন, সব ভুলে বাসায় ফিরে এসো মা (সুকন্যা)।
প্রসঙ্গত, ২৩ জুন সুকন্যা তার মায়ের সঙ্গে মডেল টেস্ট দিতে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে যান। পরীক্ষা শেষে অন্য শিক্ষার্থীরা বের হলেও মা নাজমা ইসলাম তার মেয়েকে খুঁজে পাননি।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সুকন্যা নামের ওই ছাত্রী পরীক্ষা দেয়নি। মেয়েটির মোবাইল ফোনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশতিয়াক আহমেদ ইশতিয়াকে সঙ্গে সুকন্যার পূর্বপরিকল্পিত বৈঠক হয়।
এ তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন পুলিশ ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করে। সিসিটিভি ফুটেজে ২৩ জুন সন্ধা ৭টা ৭ মিনিটে রাজধানী গেন্ডারিয়ায় সুকন্যাকে একই রিকশায় ইশতিয়াকের সঙ্গে দেখা যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর রাত ৮টা ৫ মিনিটে দুজনকে দেখা যায় আলাদা দুটি রিকশায়।
তবে দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে আজ মঙ্গলবার ২৩ আগস্ট প্রকাশ্যে এসে সুকন্যা দাবি করেন, তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার সঙ্গে কোনো ভাবেই জড়িট নন ইশতিয়াক। তাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে নেয়া হয়েছে।